বরিশালের বানারীপাড়ায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর আত্মহত্যা নিয়ে রহস্য’র সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার চাখার ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের মামা বাড়ি সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের বাগানের কাঁঠাল গাছে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করে বলে তার মামি রিনা বেগম দাবী করেন। তবে বিশেষ একটি সূত্র থেকে জানাগেছে ৪ জুলাই বুধবার সন্ধ্যার সময় চাখার ওয়াজেদিয়া মেমোরিয়াল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শেণির ছাত্রী মিম আক্তার তার মামা বাড়ির পার্শ্ববর্তী পারভেজ হোসেনের কোচিং সেন্টারে পড়তে যায়। রাত ৮ টার সময় তার শরীর খারাপ বলে শিক্ষকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে মামার বাড়ি আসতে পথিমধ্যে নিখোঁজ হয় মিম। ওই কোচিং সেন্টারে ওই সময় মিমের মামাত ভাই চাখার ফজলুল হক ইনষ্টিটিউশনের দশম শেণির ছাত্র সেও পড়তে ছিল। সূত্রের দাবী মিমের যদি শরীর খারাপ হবে ছুটি নিয়ে বাড়িতে যাবে তবে, শিক্ষক পারভেজ কেন তার সাথে মামাত ভাইকে পাঠালেন না। এদিকে মিমের মামি রিনা বেগম জানান শিক্ষক মিমকে তার ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে যেতে বলেছিল। এরপরে মিমের মামাত ভাই বাড়িতে গিয়ে মিমকে না দেখে তার মায়ের কাছে জানতে চায় সে বাড়িতে এসেছে কিনা। মিম বাড়িতে ফেরেনি নিশ্চিত হলে মামি সহ বাড়ির অন্যরা খোঁজাখোঁজি করতে থাকে। যেখানে মিমের লাশ পাওয়া যায় সেখানেও নাকি মিমকে ওই রাতে কয়েকবার খোঁজ করা হয়েছে। তবে সেখানে মিমকে পাওয়া যায়নি। অবাক করার বিষয় হলো যেখানে রাতে মিমকে অনেক কয়েকবার খোঁজ করেও পায়নি, বেলা সাড়ে ১১ টায় ওই স্থানেই তাকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই রাতে কি হয়েছিল কোমলমতি শিক্ষার্থী মিমের সাথে সে বিষয়টিও স্পষ্ট নয় অনেকের কাছে। তার মামি সহ স্থানীয় কয়েকজন মহিলা দাবী করছেন মিমের সাথে নাকি চার চারটি জীণ ছিল। ওই জীণ থেকে মিমকে মুক্ত করতে স্থানীয় মোঃ ফারুক হুজুর ও কালাম হুজুরের কাছেও তারা নিয়ে গিয়েছিল মিমকে। যখন কালাম হুজুরের কাছে নেয়া হয়েছিল তখন মিমকে ছেড়ে দিতে ওই চারটি জীণ নাকি দুটি কবুতর দাবী করেছিল। তখন কালাম হুজুর কবুতরও এনেছিল, তবে দুটি কবুতরের দাম ৮ শত টাকা হওয়ায় সে যাত্রায় মিমের মামি রিনা বেগম মিমের সাথে থাকা জীণ তাড়াতে সক্ষম হয়নি তার কাছে মাত্র ২ শত টাকা থাকার কারনে। তারা আরও জানান মিম মাঝে মাঝে জীণের কারনে অসুস্থ্য হয়ে পড়তো। এ কারনেই সে আত্মহত্যা করেছে বলে মিমের মামি সহ স্থানীয় কয়েকজন দাবী করছেন। এদিকে মিম যে কোচিং সেন্টার দিয়ে বের হয়ে প্রথমে নিখোঁজ ও পরেরদিন তার লাশ ওই কোচিং সেন্টারের প্রায় ১ শত গজ অদূরে বাগানে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, সেই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক পারভেজ মিমের লাশ না পাওয়ার আগেই ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়েন। এই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক পারভেজ’র সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সে পূণরায় বাড়িতে ফিরে আসছেন। উল্লেখ্য মিমের লাশ বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের বাগানের কাঁঠাল গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার আগেই সকাল নয়টায় শিক্ষক পারভেজ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যান বলেও তিনি জানান। গাড়িতে বসেই তিনি জানতে পাড়েন মিমের লাশ পাওয়ার বিষয়টি। অপরদিকে মিমের প্রিয় বিদ্যাপিঠ ওয়াজেদিয়া মেমোরিয়াল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে তার বিষয়ে জানতে চাইলে, আই সি টির শিক্ষক মোঃ দুলাল হোসেন জানান, তিনি মিমের সহপাঠিদের কাছে জিঙ্গেস করেছেন মিম সম্পর্কে তারা মিমের চলাফেরায় কোন অসংলগ্ন দেখেননি। তিনি আরও জানান মিম মঙ্গলবারও সুন্দর ভাবেই দ্বিতীয় সাময়িকীর বাংলা পরীক্ষা দিয়েছেন। পুলিশ মিমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেবোচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। উল্লেখ্য মিম মামা বাড়ি চাখারের আশুরাইলে থেকে লেখাপড়া করতো।