|
অর্ধ কোটি টাকার অত্যাধুনিক নতুন সব যন্ত্রপাতি প্যাকেট বন্দি
বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালের রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত
স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নতুন অর্ধ কোটি টাকার পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি থাকলেও তা রয়েছে প্যাকেট বন্দি।ফলে এসব অত্যাধুনিক যন্ত্রের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ হাসপাতালের প্রায় দেড় হাজার রোগী।শেবাচিম হাসপাতালে প্যাকেট বন্দি তিন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য তিনটি মেশিন ৩ মাস পূর্বে আসলেও এখনো চালু করা যায়নি।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাকা সিএমএসডি থেকে টেকনিশিয়ান এসে মেশিন তিনটি চালু করে যাবার কথা রয়েছে।কিন্তু এখনো টেকনিশিয়ান আসেনি।শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জুন মাসে ঢাকা কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার (সিএমএসডি) থেকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় ৩টি অত্যাধুনিক মেশিন।মেশিনগুলো হচ্ছে, ম্যাকলুমি-২০০০ হরমন মেশিন, হিউমাস্টার-৬০০ অটো এনালাইজার মেশিন ও ইলেক্ট্রোলাইট মেশিন।ম্যাকলুমি-২০০০ হরমন মেশিন দিয়ে হরমনের যাবতিয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যাবে।প্রায় ৩০ লাখ টাকায় এ মেশিনটি ক্রয় করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।হিউমাস্টার-৬০০ অটো এনালাইজার মেশিনটি ক্রয় করা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকায়।এ মেশিন দিয়ে বায়ো ক্যামিষ্ট্রিসহ অল্প সময়ের মধ্যে রক্ত পরীক্ষা করানো যাবে।আনা হয়েছে ইলেক্ট্রোলাইট মেশিন।এর আগেও এ হাসপাতালের আরো তিনটি ইলেক্ট্রোলাইট মেশিন আনা হয়েছিল, যার দুইটি উপদান না থাকায় সচল অবস্থায় অব্যবহৃত হয়ে পড়ে আছে।অবশেষ আরো একটি মেশিন যুক্ত করা হলো।একজন রোগীর শরীরের সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং কোরাইড নির্ণয়ের জন্য ইলেক্ট্রোলাইট এনালাইজার মেশিন ব্যবহার করা হয়।তবে ইলেক্ট্রোলাইট এনালাইজার মেশিন ছাড়া বাকি দুইটি মেশিনের সাথে প্রেরণ করা হয়নি কোন প্রকার রিয়েজেন্ট (মেডিসিন)।যার কারণে অত্যাধুনিক এ সব মেশিন থাকার পরও হাসপাতালের প্রায় দেড় হাজার রোগীর কোন কাজে আসছে না। বরিশালের উন্নয়ন সংগঠক আনোয়ার জাহিদ জানান, সরকারের ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন দপ্তরের অব্যবস্থাপনার কারণে এর সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না।সচল মেশিনগুলোও অচল করে চলছে ক্লিনিকাল বানিজ্য।কারণ এসব বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সাথে হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারী ও চিকিৎসকরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।ফলে ভুক্তভোগি হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।তিনি বলেন,এ হাসপাতালটি অবকাঠামগতভাবে ৫’শ শয্য থাকলেও এখানে দেড় হাজার মানুষের চিকিৎসা হচ্ছে।পাশেই বহুতল ভবন অর্ধ নির্মান করে ফেলে রাখা হয়েছে।এ সবই অব্যবস্থাপনার কারণ।হাসপাতালের আইটি শাখার ইনচার্জ পরিতোষ কুমার জানান, গত দুই তিন মাস পূর্বে তিনটি মেশিন ঢাকা সিএমএসডি থেকে প্রেরণ করা হয়েছে।কিন্তু এর সাথে রিয়েজেন্ট (মেডিসিন) পাঠানো হয়নি।যার কারণে এ মেশিন থাকার পরও রোগীর সেবায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না।আশা করা যাচ্ছে আগামী জানুয়ারীর দিকে এর রিয়েজেন্ট পাঠাবে।এব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালক ডা: এসএম সিরাজুল ইসলাম জানান, সিএমএসডি এ মেশিনগুলো ক্রয় করেছে।তারাই শেবাচিম হাসপাতালে তিনটি মেশিন দিয়েছে।কথা রয়েছে তারা ঢাকা থেকে টেকনিশিয়ান পাঠিয়ে এ মেশিনগুলো সেট (বসাবে) করে চালু করে দিয়ে যাবে।কিন্তু তারা এখনো না আসায় মেশিনগুলো চালু করা যাচ্ছে না।সেক্ষেত্রে এসব মেশিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে বরিশালের মানুষ বঞ্চিত রয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
Post Views:
১৬৭
|
|