|
নীরবে সকলের ভরসার পাত্রে পরিণত হতে থাকেন নিরব হোসেন টুটুল
বরিশালের ‘নিরব হোসেন টুটুল’ নাম নয়, একটি ব্র্যান্ড, সকলের প্রিয় ‘টুটুল মামা’
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ১৫ মাস চলছে সবে । ২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর কেন্দ্রের অনুমোদন পায় বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। কমিটিতে দেখা গেছে তরুণ আর বয়জ্যেষ্ঠ নেতাদের সংমিশ্রন। জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি যুব বয়সীরাও আসীন হয়েছেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে। যুবাদের কেউ কেউ প্রাপ্ত পদের মর্যাদা কিংবা ভারসাম্যতা বজায় রেখে সাংগঠনিকভাবে আরো দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছেন। আবার অকালে নগর কমিটিতে স্থান পাওয়া অনেকে আত্মতুষ্টিতে এতটাই দিশেহারা হয়ে পড়েন যে, কি করবেন, কাকে কি বলবেন তার হুশ-জ্ঞান হারিয়ে ঘটিয়ে ফেলেছেন অনাকাঙ্খিত আর বিতর্কিত ঘটনা। নগর আওয়ামী লীগ কমিটির ৭১জন নেতার মধ্যে গত ১৫ মাসে সফলতা-ব্যর্থতার নানা কাহিনী ঘটলেও একজন নেতা নিজেকে অনেকটা অনুকরণীয় পর্যায়ে নিয়ে গেছেন নীরবে। তিনি নিরব হোসেন টুটুল। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক। বললে অতিরিক্ত হবেনা যে, নিরব হোসেন টুটুল বর্তমান নগর আ’লীগের অঘোষিত ‘নিয়ন্ত্রক’! তবে এই ‘নিয়ন্ত্রক’র ব্যাখ্যা আধিপত্য বিস্তার নয়; পরোপকারী আচরণ আর হাস্যোজ্জল ব্যক্তিত্ব তাকে এ আখ্যা দিয়েছে। সংগঠনের অনেক কর্মকান্ডে জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সিনিয়র ও নীতি-নির্ধারকরাও তার মতামতের অপেক্ষায় থাকেন, ভরসা করেন উত্তম ফলাফল পাওয়ার বিষয়ে। এ কথা অকপটে হরহামেশাই স্বীকার করেছেন নগর আ’লীগের অনেক নেতা। সাংগঠনিক সফলতার মাপকাঠিতে পদের ভারসাম্য বজায় রেখে নিজেকে এতটাই সাবলীলভাবে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন যে, আ’লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর সর্ব পর্যায়ের নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং গোটা নগরের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের অতি পরিচিত আর পছন্দের মুখে পরিণত হয়েছেন তিনি। নিজগুণে নীরবে তবে সক্রিয়তার সাথে পথচলা এই নেতার পদটি স্বাভাবিক দৃষ্টিতে একটি রাজনৈতিক কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা না হলেও তিনি এখন নগর আ’লীগের ‘প্রাণ’ একপ্রকার। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে ইতিপূর্বে শারীরিক চিকিৎসার কারণে নিরব হোসেন টুটুলের বরিশালে অনুপস্থিতির সময়ে নেতা-কর্মীদের নিষ্প্রাণ কর্মকান্ড আর তার জন্য অপেক্ষায় থাকার মধ্য দিয়ে। তার পোর্ট রোডস্থ ইলিশ ভবনের অফিস মাঝে-মধ্যে লোকারণ্যে ছেয়ে যায়। জনশ্রুতি আছে, যে কোন আবদার কিংবা সমস্যা নিয়ে তার কাছে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হয় না কাউকে। দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে কোন সুপারিশ কিংবা বার্তা থাকলেও সাধারণ মানুষের পক্ষে তা ঠিকঠাক পৌছে দেন আ’লীগ নেতা টুটুল। দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি নিজ ক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞানসম্পন্ন হওয়ায় দলের চেইন অব কমান্ড ফলো না করা বা প্রটোকল ভঙ্গ করে কোন কাজ করা কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভিযোগও ওঠেনি কখনো দল থেকে। দলীয় নেতাদের কাছ থেকে এমনও শোনা যায়, কর্ম দক্ষতায় রাজনৈতিক ময়দানে তিনি এতটাই অগ্রসর হয়েছেন যে, তার জনপ্রিয়তা ও কর্মীবান্ধবতা অনেক সিনিয়র নেতাদেরও ইর্ষান্বিত করে। নগর আ’লীগ সূত্রে শোনা যায়, কমিটি গঠনের পূর্ববর্তী অনেকটা সময়জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর পুত্র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ কোন পদে আসীন হতে যাচ্ছেন? পাশাপাশি কে হচ্ছেন সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলে বহুদিন। কিন্তু পূর্বতন দুই সদস্যের কমিটির সভাপতি সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন মৃত্যুবরণ করার মধ্য দিয়ে অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাদিক আবদুল্লাহর কালিবাড়ি সড়কের বাসভবন নেতা-কর্মীদের পদচারণায় ভারী হতে থাকে। সে সময় গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য আশারত সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ওপর নতুন নেতৃত্বের অপেক্ষায় থাকা নেতা-কর্মীরা ছিলেন অনেকটা ভরসা করা-না করার দোলাচলে। সে-ই আস্থাহীন নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বৃহৎ অংশের মনে নির্ভরতা সঞ্চারে সফল হয়ে তখন থেকেই দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সম্মান, স্নেহ আর মূল্যায়ন করে আগলে রাখেন তিনি। নীরবে সকলের ভরসার পাত্রে পরিণত হতে থাকেন নিরব হোসেন টুটুল। পরবর্তীতে কমিটি গঠন হলে সহনশীল মানসিকতা আর দক্ষ সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি বনে যান সকলের প্রিয় ‘টুটুল মামা’। সেই থেকে বর্তমান পর্যন্ত একই গতি এবং ভারসাম্যতা বজায় রেখে চলছেন তিনি। দল অথবা দলের বাইরের হোক, আর্থিক কিংবা সামাজিক যে কোন বিপদ-বিপর্যয়ে নগরে সমাধান আর স্বস্তির নামকরণ হয়েছে ‘টুটুল মামা’। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলে থাকেন, আজকের যে সফল নগর আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী রূপে দেখা যাচ্ছে, এই পরিস্থিতি পর্যন্ত পৌছানোর পেছনে অনেক পুরানো, বয়জ্যেষ্ঠ নেতাদের চেয়ে নিরব হোসেন টুটুলের অবদান বেশি ছাড়া কম বলার সুযোগ মোটেও নেই। অপক্ষোকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও তিনিই এখন অতিমাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্ভরযোগ্য নেতা। তাই নিরব হোসেন টুটুল শুধু নাম নয়, এখন একটি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে তার ‘টুটুল মামা’ নামকরণটি, এমনটাই মন্তব্য দলীয় নেতা-কর্মীদের।
Post Views:
১,৯২৬
|
|