নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ
বরিশালের ছাত্রলীগ নেতা রেজা হত্যা পুনঃতদন্তে এক বছর
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করিম রেজা’র হত্যাকান্ডটি ছিলো বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক হত্যাকান্ড। ২০১৬ সালের ২৭ মে দলীয় প্রতিপক্ষের হাতে বর্বরোচিতভাবে খুন হয় রেজা। দেখতে দেখতে প্রায় দু’বছর কেটে গেলেও আজও শেষ হয়নি বিচারকার্য। বিচারপ্রার্থীরা আজও কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন। হত্যাকান্ডের পরে অভিযোগপত্র দাখিল হয় ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। ওইবছরের ১০ অক্টোবর অভিযোগপত্রে নারাজি দেয়া হয়। সূত্রমতে, আদালতের বিচারক মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশের সর্বোচ্চ তদন্ত সংস্থা সিআইডিকে নির্দেশ দেন। সেই থেকেও কেটে গেলো আরও একটি বছর। আজও শেষ হয়নি তদন্তকার্য। ফলে তদন্তকার্য নিয়ে আবারও চিন্তিত রয়েছেন বাদীসহ বিচারপ্রার্থীরা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করিম রেজা আসন্ন ছাত্রলীগের সম্মেলনে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের প্রধান পদের শক্ত প্রার্থী ছিলেন। যে কারণেই প্রতিপক্ষ গ্রুপটি সম্মেলন পর্যন্ত যেতে দেয়নি তাকে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে নগরীর আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করিম রেজা (২৮) হত্যা মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন বরিশাল অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অমিত কুমার দে। একই সাথে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়। একবছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়নি। সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ২৭ মে রাতে পলিটেকনিক কলেজের সামনে রাজনৈতিক বিরোধের জেরধরে ছাত্রলীগ নেতা রেজাকে কুপিয়ে হত্যা করে দলীয় প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় ৩০ মে নিহতের ভাই রিয়াজ হোসেন বাদী হয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ ১৪ ও অজ্ঞাত আরও ১২ জনকে আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান। তদন্ত শেষে এজাহারভূক্ত আসামি যুবলীগ কর্মী মেহেদী, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম, মোঃ মুন্না ও ফয়জুল শেখের অব্যহতির আবেদন জানিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট থানার জিআরও এর কাছে চার্জশীট জমা দেন পরিদর্শক আতাউর রহমান। এজাহারভূক্ত আসামিদের নাম চার্জশীট থেকে বাদ দেয়ায় গত ১০ অক্টোবর আদালতে নারাজির আবেদন করেন মামলার বাদী রিয়াজ উদ্দিন। রিয়াজ জানান, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিমের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান সঠিকভাবে তদন্ত করেননি। পক্ষপাত মূলক তদন্ত করে এজাহারভূক্ত মুল আসামিদের নাম বাদ দিয়ে দ্রুত চার্জশীট জমা দিয়েছেন। এমনকি তিনি মামলার বাদী হওয়া সত্ত্বেও অভিযোগপত্র জমা দেয়ার পূর্বে তদন্তের স্বার্থেও তার এবং মামলার স্বাক্ষীদের সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ করেনি পরিদর্শক আতাউর রহমান। ওই বছর ১৩ আগস্ট পর্যন্ত তিনবার অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন আদালতে মামলাটি অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে তদন্তভার দেয়ার জন্য আবেদন করেন বাদী। পরে পূনরায় ওই বছরের ১০ অক্টোবর নারাজি দেন তিনি (রিয়াজ)। নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।