|
দখলকৃত চার শতাংশ জমির মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় মুক্তিযোদ্ধার জমি দখল, আদালতে মামলা দায়ের
শামীম আহমেদ : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় আওয়ামীলীগের সাইনবোর্ড লাগিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক মুক্তিযোদ্ধার জমি দখল করে দোকানঘর নির্মান করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি ও স্থানীয় তিন আওয়ামীলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। জমির মালিক অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। দখলকৃত চার শতাংশ জমির মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা। স্থানীয় লোকজন ও ভূক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টরা জানান, উপজেলার ছোট ডুমুরিয়া (ভালুকশী) বাজারের জেল নং ১৪, এস এ ৮৫নং খতিয়ানের ৬৮নং দাগের ৫৪ শতাংশ জমির পৈত্রিক সূত্রে মালিক উপজেলার ছোট ডুমুরিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত মো. মোজাম্মেল হক খান ও ভাই মো. সিরাজুল হক খান। মুক্তিযোদ্ধা মো. মোজাম্মেল হক খানের বড় ভাই মো. সিরাজুল হক খান জানান, তার বাবা মো. গোলাপ খান ১৯৪৯ সালে ছোট ডুমুরিয়া গ্রামের বিপিন বিহারীরর পুত্র হরলাল দে ও অন্য দা চারন দে তার কাছে ৫৪ শতাংশ জমি সাবকবলা দলিলমূলে ক্রয় করেন। পরবর্তিততে তারা উত্তরাধিকার সূত্রে ওই জমির মালিক হিসেবে গত ৬৯ বছর ধরে জমি ভোগ দখল করে আসছেন। হাল জরিপে জমি তাদের নামে রেকর্ডভূক্ত হয়। জমি ভালুকসি বাজারের মধ্যে হওয়ায় গত এক বছর যাবত জমি দখলের পায়তারা করেন উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মো.শাহাদাত হোসেন কাজী ও স্থানীয় তিন আওয়ামীলীগ কর্মী। মৃত মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক খানের ছেলে মো. মেজবাউল হক খান (৪৫) বলেন, গত ৪ আগষ্ট আগৈলঝাড়া উপজেলা শ্রমিকলীগের নেতা শাহাদাত কাজী ও স্থানীয় তিন আওয়ামীলীগ কর্মী মো. রিন্টু (৪৭), মো. টিটিু (৪২) ও মো. রিটু (৩৭) আমার ভোগ দখলীয় সম্পত্তিতে আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন। পরের দিন ওই জমিতে দোকানঘর উত্তোলনের কাজ শুরু করেন। আমি ও আমার ছোট ভাই তোজাম্মেল হক খান কাজে বাধা দিলে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। নিরুপায় হয়ে গত ৫ আগষ্ট বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেড আদালতে মামলা দায়ের করে জমিতে অবৈধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করি। আদালতে জমিতে অবৈধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ শান্তি শৃংখলা বজায় রেখে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগৈলঝাড়া থানাকে নির্দেশ দেয়। পুলিশ ও আদালতের নিষধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মান কাজ মাজে মধ্যে চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিক লীগ নেতা ও আওয়ামীলীগ কর্মিরা। দখল করা জমির মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে থানার এএসআই মো.ছরোয়ার বশির জানান, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরে গত ৮ আগষ্ট জমিতে অবৈধ নির্মানসহ কাজ বন্ধ করে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য অভিযুক্তদের নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট ডুমুরিয়া বাজারের পশ্চিমপ্রান্তে ব্রিজ সংলগ্ন প্রায় এক শতাংশ জমিতে একটি নুতন ঘর উত্তেলন করা হয়েছে। ঘরটির কাঠামোর কাজ প্রায় শেষ এবং চালে টিন লাগানো বাকি রয়েছে। নির্মানাধীন ঘরের সংঙ্গে দুই পাশে দুটি সাইনবোর্ড ঝুলছে। তাতে লেখা রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ রাজিহার ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কার্যালয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধ মো. মোস্তফা হাওলাদার (৭৭) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ৬০-৭০ বছর ধরে ওই জমি মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক খান ও তার ছেলেরা ভোগ দখল করে আসছে এবং তারাই বৈধ মালিক। অভিযুক্ত শ্রমিকলীগ নেতা মো.শাহাদাত কাজী জানান, জমি এক সময় তাদের ছিল বর্তমানে কাগজপত্রে স্বুল ও সরকারের নামে রেকর্ড হয়েছে। তাই সরকারি জমিতে দলীয় সমর্থকরা মিলে দলের কার্যালয় নির্মান করছি। ওই জমিতে ৩০বছর ধরে আবিদ হাসান কালার পিতা ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি জুলহাস উদ্দিন ফকিরের দোকান ঘর ছিল। আমার কারো ব্যক্তিগত জায়গা দখল করে দলীয় কার্যালয় নির্মান করিনি। সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস তালুকদার বলেন, আমার মামাতো ভাইয়েরা কোন দখলে জড়িত নাই। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আ.লীগ কার্যালয় নির্মান প্রসঙ্গে বলেন, ওই জমি সরকারি, আর সরকারি জমিতে যে কেউ দখল করে ভোগ করতে পারে।
 All-focus
Post Views:
১,৩৮২
|
|