|
এক জোড়া বাচ্চা দুই হাজার টাকায় কিনলে তিনমাস পরে তা ৮-১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় টার্কি মুরগির ব্যবসা এখন জমজমাট
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় টার্কি মুরগির ব্যবসা এখন জমজমাট।দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ করে মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করছেন আগৈলঝাড়া উপজেলার সৌখিন ব্যবসায়ী দীলিপ কর্মকার।এ মুরগি পালনে সহায়তা করেন দীলিপের পরিবার।টার্কির উৎপত্তি উত্তর আমেরিকায়।কিন্তু ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশে পালন করা হয় এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খাদ্য তালিকায় অন্যতম এর মাংস।ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে ওঠার ছয় মাসের মধ্যে টার্কি ডিম দেয়।ছয় মাসের মেয়ে টার্কির ওজন হয় পাঁচ থেকে ছয় কেজি।আর পুরুষগুলোর ওজন হয় প্রায় আট কেজি।আমেরিকায় টার্কির রোস্ট অভিজাত খাবার।আমাদের দেশে মুরগির মাংসের মতো করেই টার্কির মাংস রান্না করা হয়।রোস্ট ও কাবাব করা যায় এই মাংস দিয়ে।এ মুরগী পর্যাপ্ত না থাকায় এখনো দাম একটু বেশি।সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে টার্কি খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়নি এখনো।দীলিপ জানায়, আমার কাছ থেকে বাচ্চা নিয়ে অনেকে সৌখিন খামারি ছোট আকারে টার্কি পালন শুরু করেছেন।তিনি নিজে এর মাংস খেয়েছেন।খেতে খুব সুস্বাদু।টার্কির খাবার নিয়ে মুরগির চেয়ে দুর্ভোগ কম।এরা ঠাণ্ডা-গরম সব সহ্য করতে পারে। দানাদার খাবারের চেয়ে কলমির শাক, বাঁধাকপি বেশি পছন্দ করে।এগুলো জোগাড় করা সহজ।এ ছাড়াও এলাকায় কোনো দুর্গন্ধ ছড়ায় না।উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের কালুপাড়া গ্রামের দীলিপ কর্মকার আরো জানান, এক বছর আগে চ্যানেল আই টিভিতে সাইখ সিরাজের একটি অনুষ্ঠান দেখে টার্কি মুরগি পালনের ইচ্ছে জাগে।পরে খুলনার চিত্রালী হাট থেকে ১মাসের টার্কি মুরগির ৪পিচ বাচ্চা আট হাজার টাকায় কিনে আনি।তারপর ছোট্ট একটি ঘরে এই মুরগির লালন পালন শুরু করে।এই মুরগি ছয় মাস পালনের পরে ডিম পারা শুরু করে।দীলিপ ওই মুরগির ডিম দেশী মুরগি দিয়ে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে রাখত।এর মধ্যে প্রথম কেনা চারটি মুরগি অসুস্থ্য হয়ে পরলে দীলিপ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে যোগাযোগ করলে তারা ভুল চিকিৎসা দেয়ায় তখন ওই চারটি মুরগিই মারা যায়।পরে দীলিপ আবারও টার্কি মুরগি সংগ্রহ করে নতুন করে পালনের চেষ্টা করে।এখন দীলিপের ফার্মে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০-৬০টি মুরগি রয়েছে।এক জোড়া বাচ্চা দুই হাজার টাকায় কিনলে তিনমাস পরে তা ৮-১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।ক্রেতারা বাড়ীতে এসে নিয়ে যায়।বিক্রির জন্য কোথাও যেতে হয় না।একজোড়া ডিম বিক্রি হয় ৮শ টাকায়।মুরগির রং হিসেবে দামও কমবেশী হয়।রয়েল কালারের মুরগির দাম বেশী।এক জোড়া রয়েল কালারের মুরগি ১২-১৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।এক জোড়া বাচ্চা বিক্রি হয় ২৫শ টাকায়।অনেক সময় শখ করেও অনেকে কিনে নিয়ে যায় পালনের জন্য।মাসে ৩ হাজার টাকা খরচ করে ২৫-৩০ হাজার টাকা লাভ হয়।তিনি আরো বলেন, এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা বাড়ীতে এসে নগদ টাকায় মুরগি কিনে নিয়ে যায়।এদের রোগ বালাইও হয় না।খাবারের বিষয়ে তিনি বলেন, এদের বাড়তি কোন খাবার লাগে না।পোল্ট্রি ফিড, ঘাস ও কচুরিপানা দেই প্রতিদিন।এ মুরগি পালন করে বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হতে পারেন উল্লেখ করে দীলিপ কর্মকার জানান, খুব ছোট পরিসরের খামার হলেও এটি একটি লাভজনক ব্যবসা।তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে খামারটি আরো বড় পরিসরে করতে পারবো, যেখানে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হবে।এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা.আশুতোশ রায় বলেন, টার্কি মুরগী ব্যাপক ভাবে খামার করে পালন শুরু হয়নি আগৈলঝাড়ায়।শখের বসে অনেকেই বাড়িতে বসে পালন করছে।
Post Views:
১,৮৭৪
|
|