Current Bangladesh Time
সোমবার জানুয়ারি ২০, ২০২৫ ৭:৩৫ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » ফের বেপোয়ারা বরিশালে রোগী ধরা দালালেরা 
Saturday December 22, 2018 , 2:11 pm
Print this E-mail this

দালাল প্রতিরোধে সিটি মেয়র, নগর পুলিশ কমিশনার এবং র‌্যাবের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা

ফের বেপোয়ারা বরিশালে রোগী ধরা দালালেরা


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : দালালের কাছে জিম্মি বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের অসহায় রোগীরা। নামিদামী এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিতে নগরীতে আসা গ্রামাঞ্চলের রোগীরা সর্বস্ব হারাচ্ছে দালালদের ফাঁদে পড়ে। তথা কথিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের কাছে ধরে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে তাদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই দালাল চক্র। এতে করে রোগীরা আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি বিপদগ্রস্থ হলেও রীতিমত আগুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে দালাল নির্ভর চিকিৎসক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক মালিক এবং দালাল চক্র। কিন্তু দালালদের প্রতিরোধে দেখা যাচ্ছে না আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোন নির্দিষ্ট ভূমিকা। মাঝে মধ্যে দু’একজন দালালকে আটকের মাধ্যমে আই ওয়াশ দেখানো হলেও পরবর্তীতে আর কোন কার্যক্রম দেখা যায় না। তবে অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট থানার কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগ সাজশে মাসোয়ারার বিনিময়ে দালালি কার্যক্রম চালিয়ে আসছে চক্রটি। ফলে বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং সুধি মহলে দেখা দিয়েছে নানা ক্ষোভ। বিষয়টির প্রতি মহানগর পুলিশের কমিশনার এর সু-দৃষ্টি কামনাও করেছেন তারা। জানাগেছে, দীর্ঘদিন ধরেই বিভাগীয় শহর বরিশাল নগরীতে দালাল চক্র বেশ দাপটের সাথেই আধিপত্ত বিস্তার করে আসছে। লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনাল, হাসপাতাল এবং সদর রোডসহ বাটার গলি, কাকলীর মোড়, বিবির পুকুরের আনাচে-কানাচে, এমনকি ডাক্তার পাড়ায় ওৎ পেতে বসে থাকে সংঘবদ্ধ একটি দালাল চক্র। লঞ্চ কিংবা বাস থেকে টার্মিনালে নামা মাত্রই কৌশলে রোগীদের ফাঁদে ফেলছে এই দালালরা। গ্রামগঞ্জ থেকে আসা রোগীদের ভুলিয়ে ভালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট কোন হাতুড়ে ডাক্তারের চেম্বার কিংবা ক্লিনিকে। এজন্য কোন কোন সময় কৌশলগত কারণে নামিদামী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মৃত্যুর গুঞ্জনও ছড়িয়ে দিতেও একটুও কুন্ঠিত বোধ করছে না এই সংঘবব্ধ দালাল চক্রটি। লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনাল এবং সদর রোড এলাকায় চিকিৎসকের খোঁজ করা কিংবা হাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজপত্র দেখা মাত্রই তাদের উপরে ঝাপিয়ে পড়ে রিক্সা এবং অটোরিক্সা চালক বেশে রোগী ধরার এ সমস্ত দালালরা। এমনকি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদেরকেও ফুসলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে হাতুড়ে চিকিৎসকদের চেম্বার, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। বিনিময়ে চিকিৎসক এবং দালাল নির্ভর প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাচ্ছে মোটা অংকের পার্সেন্টেজ। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, লঞ্চঘাট, নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, রূপাতলী বাস টার্মিনাল, সদর রোড এলাকা এবং শেবাচিম হাসপাতাল এলাকায় রয়েছে অর্ধশতাধিক দালাল। এদের মধ্যে পেশাদার চিহ্নিত দালালের চালিকায় রয়েছে প্রায় অর্ধশত দালাল। যারা শুধুমাত্র দালালি পেশার উপর নির্ভরশীল। এদের মধ্যে রয়েছে, চিহ্নিত দালাল আব্দুর রশিদ। জনসেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তার বেশে বসে থাকে সে। পাশাপাশি তার ভাই সহিদের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করছে নগরীর বিশাল দালাল সিন্ডিকেট। রশিদ এবং সহিদ সহদর ছাড়াও তাদের দালাল সিন্ডিকেটে রয়েছে রিপন, রুহুল, নাসির, টেন্ডার আনিস, আনোয়ার, সাবু, মামুন, কালা মানিক, পাগলা মানিক, আমতলার মোড় এলাকার ছদ্দনাম কাডবডি, বাচ্চু, কামাল লিটন, মনির। এদের একাংশের নিয়ন্ত্রন করছে নগরীর আলোচিত দালাল এবং চিকিৎসক হত্যা মামলার আসামী শাহীন ওরফে ঝাড়ুদার শাহিন। দালাল চক্রটি সদর রোডের পাশাপাশি নথুল্লাবাদ, রূপাতলী বাস টার্মিনাল এবং লঞ্চ ঘাট এলাকায় রোগী ধরার ফাঁদ পাতছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ দালালই অটোরিক্সা এবং রিক্সা চালক বেশে গ্রামাঞ্চল থেকে চিকিৎসা নিতে বরিশালে আসা রোগীদের ফাঁদে ফেলছে। এদের বাইরে সদর রোড এলাকায় রয়েছে দালালদের বিশাল সিন্ডিকেট। কাকলি’র মোড় থেকে শুরু করে হাসপাতাল রোডে সদর হাসপাতাল পর্যন্ত রোগী ধরার জাল বিস্তার করে রেখেছে চক্রটি। বিশেষ করে সদর রোডে বিবিরপুকুর পাড় সংলগ্ন ডাক্তার পাড়ায় এদের আনোগোনা বেশি। ১৫ থেকে ২০ জনের সংঘবদ্ধ দালাল ওৎ পেতে থাকছে রোগীদের আসায়। এর মধ্যে চিহ্নিত দালাল এর তালিকায় রয়েছে স্বপন, মিজান, সুমন, মাসুম, জাহাঙ্গীর, বাবু, সাদ্দাম ও বসন্ত। তাদের পাশাপাশি রিক্সা চালক বেশে রয়েছে দালাল শাহ আলম, লিয়াকত ও সোহরাব। এর মধ্যে সোহরাব বেশিরভাগ সময় লঞ্চঘাট এলাকায় রিক্সা চালক বেশি রোগী ধরার কাজ করছে। ডা: হাসানুজ্জামান, ডা: হরিহর রায় চৌধুরী, ডা: মোশারেফ হোসেন, লঞ্চ ঘাট বিআরটিসি বাস টার্মিনাল সংলগ্ন ডা: সোহরাব হোসেন সোহাগসহ আরো বেশ কিছু হাতুড়ে ডাক্তারের রোগী ধরা দালাল হিসেবে কাজ করছে দালাল সংঘবদ্ধ দালাল চক্রটি। অনেক রোগীর অভিযোগ, কতিপয় ডাক্তারা তাদের পছন্দমত ল্যাব কিংবা ডায়গনষ্টিক থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করালেও ঘটে বিপত্তি। কতিপয় এসব ডাক্তারদের অশোভন আচরণসহ এমনকি কোন প্রকার ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই রিপোর্ট ছুঁড়ে ফেলার মতও ঘটনা ঘটে। ইতিপূর্বে এসব দালালরা কয়েকবার ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। কিন্তু এক দিনের মাথায় আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পূণরায় দালালি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে দালালরা। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের ধরতে ডিবি কিংবা থানা পুলিশের কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। সদর রোডের বাইরে শেবাচিম হাসপাতালেও রয়েছে দালালদের বিশাল সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছে হাসপাতালের কতিপয় চতুর্থ শ্রেণি এবং চুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। এর মধ্যে চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর সংখ্যাই বেশি। ইতিপূর্বে র‌্যাব-৮ সদস্যরা শেবাচিম হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির বেশ কয়েকজন দালালকে আটক করে। এমনকি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের অর্থদন্ডও দেয়া হয়। কিন্তু তার পরেও শেবাচিম হাসপাতালে এক শ্রেণির কর্মচারী নেতা এবং পুলিশের যোগ সাজশে দালালি কার্যক্রম চালাচ্ছে দালালরা। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ইতিপূর্বে কোতয়ালী মডেল থানায় সহকারী পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান দায়িত্বে থাকাবস্থায় সদর রোড এবং শেবাচিম এলাকার বিপুল সংখ্যক দালালদের আত্মসর্পনের জন্য বলেন। সে অনুযায়ী আত্মসমর্পন করে ভালো কাজে ফিরে যাবার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলো ২৫/২৭ জন দালাল। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের আত্মসমর্পন করানো হয়নি। এসি আসাদুজ্জামানের অনুপস্থিতির সাথে সাথে দালাল চক্রটি পূণরায় সক্রিয় আর বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রোগীদের ফাঁদে ফেলে তাদেরকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে সংঘবদ্ধ এই দালাল চক্রটি। অবশ্য চক্রটিকে মিডিয়া এবং প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তি নিয়ন্ত্রন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একেরপর এক ব্যাঙের ছাতার মত বরিশালে গজে উঠছে ডায়গনস্টিক সেন্টার বা ক্লিনিক। তার পরেও দক্ষিণাঞ্চলের অসহায় মানুষদের স্বার্থে দালাল প্রতিরোধে বরিশালের বর্তমান সিটি মেয়র, নগর পুলিশ কমিশনার এবং র‌্যাবের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন চিকিৎসক, রোগী এবং নাগরীক সমাজ।




Archives
Image
মহাসড়কে পার্ক : অপসারণের দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন
Image
বরিশালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম শুরু
Image
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে
Image
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পুতুলকে সরাতে চিঠি দেবে দুদক
Image
সীমান্তে বিজিবিকে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহারের অনুমতি