|
প্রশাসন কি সত্যিই কঠোর ব্যবস্থা নেবে, নাকি এই অবৈধ জুয়ার আসর আরও বিস্তার লাভ করবে?
প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ! বরিশালে পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় জুয়ার রমরমা ব্যবসা
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল নগরীতে রাত নামলেই জমে ওঠে জুয়ার আসর। সন্ধ্যা নামতেই স্থানীয় ও বাইরের জুয়ারিরা এসব হোটেলে ভিড় করছেন, যেখানে লাখ লাখ টাকার লেনদেন হয়। চায়ের দোকান কিংবা ক্লাবে নয়, বরং অভিজাত হোটেলগুলোতে গোপনে চলে এই অবৈধ কার্যক্রম। তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য এবং সাংবাদিক পরিচয়ধারী ব্যক্তিরা এই জুয়ার আসর পরিচালনায় সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই অবৈধ কার্যক্রমের পেছনে পুলিশের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্যমতে, আমানতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল কাদের তার ওপরস্থ কর্মকর্তার প্রশ্রয়ে নগরীর বিভিন্ন হোটেল ও বাসাবাড়িতে সুসংগঠিত জুয়ার আসরগুলো পরিচালনা করছেন। শুধু কাদের একা নন, কিছু অনলাইন পোর্টালের কথিত সাংবাদিকও এই অপরাধচক্রের অংশ হয়ে গেছে। নগরীর অভিজাত হোটেলগুলোর কক্ষে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়, যেখানে সর্বস্বান্ত হয়ে ফিরে যান সাধারণ মানুষ। গোপন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে গির্জা মহল্লার হোটেল ইম্পেরিয়ালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পুলিশের উপস্থিতিতেই জুয়া চলছে। হোটেলের কর্মচারীরা প্রথমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরে স্বীকার করে, কনস্টেবল কাদের নিয়মিত এখানে আসেন এবং একাধিক কক্ষে সময় কাটান। এখানে ‘ওয়ান-টেন বোর্ড’ নামে এক ধরনের জুয়া খেলা হয়, যেখানে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পিন গেঁথে টাকা জেতার সুযোগ থাকে। তবে বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ খেলোয়াড়ই সর্বস্বান্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন। এবিষয়ে কনস্টেবল কাদেরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে আমানতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কুদ্দুস জানান, “কাদের যদি তার ডিউটি শেষে ব্যক্তিগত কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন, তবে এর দায়ভার আমরা নেব না।” অপরদিকে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মিজানুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে আগে জানতাম না, তবে একজন আমাকে জানিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অন্যদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ও সচেতন নাগরিকরা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তারা বলছেন, “যদি অবৈধ জুয়ার আসর বন্ধ করা না হয়, তবে যুবসমাজ আরও অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হবে।” এখন প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসন কি সত্যিই কঠোর ব্যবস্থা নেবে, নাকি এই অবৈধ জুয়ার আসর আরও বিস্তার লাভ করবে?
Post Views: ০
|
|