Current Bangladesh Time
বৃহস্পতিবার ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫ ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » পর্যটনে অপার সম্ভবনা – ঝালকাঠির ‘ছৈলার চর’ 
Friday March 9, 2018 , 9:44 am
Print this E-mail this

শীত মৌসুমে বদলে যায় ছৈলার চরের দৃশ্য, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পিকনিক ও আনন্দ ভ্রমণে আসেন ছৈলার চরে

পর্যটনে অপার সম্ভবনা – ঝালকাঠির ‘ছৈলার চর’


বিশখালী নদীর জলরাশির মধ্যে এক টুকরো সবুজ। প্রকৃতি যেন সব সৌন্দর্য এখানে উজাড় করে দিয়েছে। নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় এ ভূখণ্ডের নাম ছৈলার চর। বঙ্গোপসাগর থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তরে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া অংশে এই চরের অবস্থান। এখানে আট প্রকার উদ্ভিদের মধ্যে প্রধান উদ্ভিদ ছৈলা। ফলে এ দ্বীপের নামকরণ হয়েছে ছৈলার চর। দ্বীপে মোট উদ্ভিদের ৯৫ শতাংশই ছৈলা গাছ। ছৈলা ছাড়াও এখানে কেয়া, হোগল, রানা, এলি, মাদার, আরগুজি গাছ রয়েছে। প্রায় ৫০ একর জায়গা নিয়ে জেগে ওঠা এ দ্বীপে কোনো জনবসতি নেই। তবে পাখির কোলাহল রয়েছে। এ দ্বীপের বড় অংশ বর্ষাকালে জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়। শীত মৌসুমে দ্বীপটি ভিন্নরূপে সেজে ওঠে। তখন বক, বুলবুলি, মাছরাঙ্গা, ডাহুক, শালিক, ঘুঘু, হলদে পাখিসহ অনেক প্রজাতির পাখি দেখা জায়। দুই যুগ আগে এ দ্বীপটি প্রথম স্থানীয়দের নজরে পড়ে। এখন ধীরে ধীরে বাড়ছে দ্বীপের আয়তন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ছৈলা গাছের ফল সবুজ। এর ফুলে সাদা-লাল সংমিশ্রণ রয়েছে। এই ফুলের গোড়া কেটে রাতে ভিজিয়ে রাখলে সকালে মধু জমে ফুলের গোড়ায়। উপকূলীয় অঞ্চলের কিশোর-কিশোরীদের কাছে এ ফুলের মধু বেশ প্রিয়।
জানা গেছে, ম্যানগ্রোভ জাতীয় এ উদ্ভিদ নদীভাঙন রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া সিডরের সময় উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষায় ছৈলা গাছের বিশেষ ভূমিকা ছিল। যদিও সিডরের আঘাতে হাজার হাজার ছৈলা গাছ ভেঙে যায়। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি-বনায়ন বিজ্ঞান বিভাগের ডিন ড. আলমগীর কবির জানান, ছৈলা গাছ ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদ। উপকূলীয় এলাকার নদী ও খালের পাড়ে এ গাছ বেশি জন্মায়। সাধারণত জোয়ার-ভাটার পানি থাকে এমন এলাকায় বেশি দেখা। এ উদ্ভিদটি তুলনামূলক কম লবণাক্ত মাটিতে জন্মে। এই উদ্ভিদটির শেকড় মাটির অনেক গভীর যায়। ফলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা থেকে উপকূলীয় জনসাধারণের জানমাল রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে এই গাছ। সুন্দরবন অঞ্চলজুড়ে এই গাছের দেখা মেলে। তবে বিশখালী ও বলেশ্বর নদের দুই পাড়েই রয়েছে অনেক ছৈলা গাছ। এই গাছের টকজাতীয় ফলটি কাঁচা, পাকা ও রান্না করা অবস্থায় খাওয়া যায়। এমন কী এ ফল দিয়ে জেলিও তৈরি করা সম্ভব। এখানে পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি ছৈলা গাছের ওপর নির্ভর করে অনেক ধরনের খাদ্য তৈরির সম্ভাবনাও আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীত মৌসুমে বদলে যায় ছৈলার চরের দৃশ্য। ঝালকাঠিতে পর্যটন কেন্দ্র না থাকায় ওই সময় এখানে প্রতিদিন প্রকৃতিপ্রেমীরা আসেন। বিশখালী নদীর ওপারে রয়েছে বরগুনা জেলা। ওই জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পিকনিক ও আনন্দ ভ্রমণে আসেন ছৈলার চরে। এই চরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। নদী পাড়ে একটি কাঠের জেটি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা তত জোরদার নয়। তার পরেও শীত ও বসন্তকালে ছৈলার চর পর্যটকের মিলনমেলায় পরিণত হয়। এ বিষয়ে কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. শরীফ মুহম্মদ ফয়েজুল আলম জানান, ২০১৫ সালে ছৈলার চর পর্যটন স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে পর্যটকদের জন্য দুটি টয়লেট, নিরাপদ খাবার পানির জন্য একটি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। পর্যটকদের রান্নার জন্য ছোট পরিসরে একটি টিনের ঘর তৈরি করা হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, ছৈলার চর পর্যটন শিল্পের জন্য সম্ভাবনাময় একটি জায়গা। এখানে পর্যটকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ছৈলার চরকে নান্দনিকরূপে সাজানো হবে।




Archives
Image
নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধ ঘোষণা
Image
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র ও দলিলপত্র প্রদর্শনী
Image
মহান বিজয় দিবসে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের শ্রদ্ধা
Image
বরিশালে ট্রাক নিয়ে এসে স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি
Image
বরিশালে ‘হুমাহুম’ ও ‘খাবার বাড়ি’ রেস্তোরাঁকে মোট ২ লাখ টাকা জরিমানা