মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : পটুয়াখালীতে সন্তান প্রসবের সময় করা অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিনমাস পর পেট থেকে গজ বের করার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মাকসুদা বেগমকে আদালতের নির্দেশ অনুসারে ৯ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে সংশ্লিষ্ট ক্লিনিক ও ভূঁয়া ডাক্তার রাজন দাস। এ টাকা পরিশোধের পর বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চকে নির্ধারিত সময়ে অবহিত করেন তাদের আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) এ বিষয়ে মাকসুদার আইনজীবী ইমরান সিদ্দিক জানান, আদালেতর আদেশ অনুসারে তারা এ টাকা পরিশোধ করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হলফনামা দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৭ মে দিনও নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। একটি জাতীয় দৈনিকে গত বছরের ২২ জুলাই ‘সাড়ে তিন মাস পর পেট থেকে বের হল গজ!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরদিন ২৩ জুলাই প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শহিদ উল্লাহ। ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিনমাস পর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে প্রসূতি মাকসুদা বেগমের (২৫) পেট থেকে গজ বের করা হয়েছে। মুমূর্ষু ওই নারীকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পেটের ভেতর গজ থাকায় খাদ্যনালীতে অনেকগুলো ছিদ্র হয়ে গেছে।’ মাকসুদা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বিলবিলাস গ্রামের মো. রাসেল সরদারের স্ত্রী। গত বছরের মার্চে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তখন তার পেটে গজ রেখে সেলাই করে দিয়েছিলেন ঐ ডাক্তার। মাকসুদার মা রোকেয়া বেগমের বরাত দিয়ে আইনজীবী শহিদ উল্লাহ বলেন, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার একমাস পর মাকসুদা পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করায় আবারও ওই ক্লিনিকে যান তারা। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওষুধ দিয়ে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করেন। দুই মাস পর খিঁচুনি দিয়ে জ্বর ওঠে। তখন খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। গত জুনে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেখানো হয়। তখন আলট্রাসনোগ্রাফিতেও কিছু ধরা পড়েনি। এরপর পটুয়াখালীতে এক চিকিৎসককে দেখানোর পর তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। ১২ জুলাই হাসপাতালে মাকসুদার অস্ত্রোপচার হয়। তখন তার পেটের ভেতর থেকে গজ বের করা হয়। এ ঘটনায় ২৩ জুলাই পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ও পটুয়াখালীর বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকের মালিককে তলব করে রুল জারি করেন একই হাইকোর্ট বেঞ্চ। ১ আগস্ট হাইকোর্টে হাজির হয়ে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় তাদের।