|
অবৈধ এ্যাম্বুলেন্স ও দালালদের রুখবে কে !
নৈরাজ্য বরিশাল শেবাচিম কম্পাউন্ডে
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের চিত্র পাল্টে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনও নিয়ন্ত্রনে আনতে পারেনি অবৈধ এ্যাম্বুলেন্স পাকিং ও দালাল চক্র। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত হাসপাতালের বিভিন্ন পয়েন্টে দালালদের আখড়া জমে উঠছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু করতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারন রোগীদের। তাদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিচ্ছেনা কোন ব্যাবস্থা। এর রহস্যটা কি ? এ প্রশ্ন হাসপাতাল কর্মচারীদের মধ্যেও বিরাজ করছে। হাসপাতাল সূত্রে জানাযায়, বছরে দুই একবার প্রশাসন অভিযান শুরু করে দালাল ও ওষুধ প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। অভিযানে ছোট খাটো কিছু দালাল হাসপাতালে প্রবেশ করতে না পারলেও প্রতিদিনই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রবেশ করে যাচ্ছে দালালদের মূল হোতারা রয়েছে তারা ধরা ছোয়ার বাহিরে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানায়, ব্লাড বাংক, প্যাথলজি, জরুরি বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার, বহি:বিভাগের সহ কয়েকটি বিভাগের কিছু অসাধু কর্মচারীদের যোগসাযোগের মাধ্যমেই নিরবে চলছে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম। দালাল সদস্যদের মূল হোতারা বেশি ভাগই হাসপাতালে প্রবেশ করেন বিভিন্ন কৌশলে। তিনি আরো বলেন, দালাল চক্রটির কার্যক্রম হাসপাতালে কিছুটা কমে গেলে বর্তমানে কর্মচারীদের দূর্নীতির কার্যক্রম চলছে দ্রুত গতিতে। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন শারমিন বলেন, দালালদের বিরুদ্ধে অভিযান নেওয়ার পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো দরকার। কারন দালালরা না থাকলেও তাদের কার্যক্রমের মতই কাজ করে যাচ্ছে হাসপাতালের কর্মচারীরা। যেমন একটি মানুষ সড়ক দূর্ঘনায় আহত হয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসে প্রথমেই ১১ টার পরিবর্ততে দিতে হচ্ছে ১৫ টাকা। পরে রোগীর অবস্থা খারাপ থাকলে চিকিৎসক ভর্তি দিয়ে দেয়। পরে ছোট টিকিট নিয়ে জরুরি বিভাগে ব্রারাদারদের কাছে ভর্তি হতে গেলে ১৫ টাকার পরির্বতে নিচ্ছে ৩০ টাকা। অন্য দিকে বহি:বিভাগে ডাক্তার দেখাতে গেলে প্রথমে সিরিয়ারে দাড়াতে হয়। আর যদি সিরিয়ালে না দাড়িয়ে ডাক্তার আগে দেখাতে হয় তাহলে এম,এল,এসদের ২০ থেকে ৫০ টাকা ঘুষ দিলেই আদর করে আগে দেখিয়ে দেয় তারা। আর যদি টাকা না দেয় তাথলে লাইনেই দাড়িয়ে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা অসুস্থ রোগীদের। হাসপাতালের ৫ম তলায় বিভিন্ন অপারেশন থিয়েটারের সামনে অবস্থান করে থাকেন দালাল চক্রের সদস্যরা। রোগীর স্বজনদের ভুল বুঝিয়ে অপারেশনের সিরিয়াল আগে করিয়ে দেওয়ার কথা,অপারেশন স্পেশাল ভাবে করি দেওয়াসহ বিভিন্ন কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা দালাল চক্রের সদস্যরা। অন্যদিকে বেশ কয়েক বছর ধরে হাসপাতালের প্রধান ফটকসহ চার পাশেই অবৈধ ভাবে এ্যাম্বুলেন্স গ্যারেজ হিসেবে ব্যাবহার হচ্ছে। রোগীদের জিম্মি করে প্রতি মাসে এ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতি হাতিয়ে নিয়ে লক্ষাধিক টাকা। একটি গোপন সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল চক্রে অবৈধ স্থাপন উচ্ছেদ করা হলেও কখনো অবৈধ এ্যাম্বুলেন্স স্টানটি উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। সরজমিনে গিয়ে আরো দেখা যায়, হাসপাতাল জম্মলগ্ন থেকেই হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে হাসপাতাল ব্যাউন্ডারি রয়েছে। কিন্তু অবৈধ এ্যাম্বুলেন্স চক্রটি এতোটাই ক্ষমতাসীন যে হাসপাতাল ব্যাউন্ডারির ওয়াল ভেঙ্গে মাঠের ভিতরে গড়ে তুলছে অবৈধ স্টান্ড। এ্যাম্বুলেন্স মালিকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, হাসপাতালের পরিচালকই আমাদের মাঠের মধ্যে গাড়ি রাখতে বলেছে। গোপন সূত্রে জানা যায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ট্রাফিক পুলিশ, স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীরা সেখান থেকে প্রতিমাসে নিচ্ছে মোটা অংকের মাসোয়ারা। তাদের মাসোয়ার কাছে জিম্মি রোগীর স্বজনরা। রোগীদের জিম্মি করে সরকারী জায়গা দখল করে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকার চেয়েও বেশি হাতিয়ে নিচ্ছে এ্যাম্বুলেন্স মালিক সমতি সভাপতি, সম্পাদক। হাসপাতালের গেট পার হলেই পিপরার মতো আখরে ধরে এ্যাম্বুলেন্সের দালাল সদস্যরা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক রোগীর স্বজনদের অভিযোগ দালালদের মতো অবৈধ এ্যাম্বুলেন্স গুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো দরকার এবং কি হাসপাতাল চক্রে তাদের পাকিং করতে দেওয়া সম্পূর্ন নিষেধ করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। এব্যাপারের হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আ: কাদির জানায়, অগের চেয়ে বর্তমানে হাসপাতালে দালালের সংখ্যা অনেক কম রয়েছে এবং যেগুলো রয়েছে তাদের ধরার জন্য অভিযান চলছে। তবে হাসপাতাল চক্রে অবৈধ এ্যাম্বুলেন্স গুলোর বিরুদ্ধে কিছু বলেনি তিনি। তাহলে প্রশ্ন : হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি অবৈধ এ্যাম্বুলেন্স থেকে মাসোয়ারা নিচ্ছে?
মো: আরিফ হোসেন, অতিথি প্রতিবেদক
Post Views:
১৭৫
|
|