Current Bangladesh Time
মঙ্গলবার মার্চ ২৫, ২০২৫ ৮:৪৮ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » দোষ কি ছিল সে-ই শিশুটির !!! 
Friday August 18, 2017 , 9:48 pm
Print this E-mail this

ফটোগ্রাফি আর চিত্রাঙ্কানের পার্থক্যটাই তো ঐ মূর্খ লোকগুলোর বোধগোম্যের বাইরে

দোষ কি ছিল সে-ই শিশুটির !!!


সুব্রত বিশ্বাস : সৌভাগ্য ও সুযোগ হয়েছিল শিশুদের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক একটি শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা দেখার।এক একটি শিশুর সেকি আঁকা ছবি।সত্যিই অবিশ্বাস্য! ছবিগুলোতে ওরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের দৃশ্য এঁকেছে।ছবিতে মুক্তিবাহিনী গুলি করছে পাকিস্তানি বাহিনীকে লক্ষ্য করে, রাজাকারদের লক্ষ্য করে।কিন্তু ওদের প্রতিটি ছবিতেই পাকিস্তানি বাহিনী বা রাজাকাররা ইয়া গোঁফওয়ালা মুক্তিযোদ্ধারা ওদের দৃষ্টিতে ইয়াং।নিষ্পাপ শিশুদের চিন্তাধারাই রীতিমত অবাক করার মতই। সুপ্রিয় পাঠক, আপনাদের কাছে আমার একটি-ই প্রশ্ন: মুক্তিযোদ্ধাদের তাহলে ইয়াং বানিয়ে কি এই সমস্ত নিষ্পাপ শিশুরা তাহলে কি মহান মুক্তিযুদ্ধ কি অবমাননা করল? না কি কোন বিকৃত করছে সে-ই প্রেক্ষাপটকে? আর এর জন্য এই কোমলমতি আর নিষ্পাপ শিশুদের বিরুদ্ধে মামলা হবে বা হওয়া উচিত? আর যারা এই ছবিগুলো নির্বাচন করে এভাবে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে প্রদর্শন করেছেন তাহলে তাদেরও কি জেলে ঢোকানো হবে ? না কি উচিত? বরিশালে ঠিক ঘটে গেল এরকমই একটি ঘটনা।একটি শিশু পরম মমতায় তার চিন্তাধারায় এঁকেছিল জাতির পিতাকে।আর সে-ই ছবিটি পেছনের কভারে রেখে একটি আমন্ত্রণপত্র ছেঁপেছিল উপজেলা প্রশাসন।আর সেটি দেখে আওয়ামী লীগের এক পাতি নেতার মনে হয়েছে, বিকৃত করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির।ব্যাস্, বিধি বাম।অমনি মামলা ঠুকে দেয়া হলো উপজেলা প্রশাসনের প্রধান কর্মকর্তা ইউএনওর বিরুদ্ধে।সেই মামলাতেই বিজ্ঞ বিচারক ইউএনওকে জামিন না দিয়ে সোজা জেলে পাঠিয়ে দেন।অবশ্য মাত্র ২ ঘন্টা পরেই তাকে আবার জামিনও দেয়া হয়।একটু পেছনের দিকে গেলে মামলার আসামি গাজী তারিক সালমান বরগুনা সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। ঘটনাটি মার্চের আগে।সেসময় গাজী তারিক সালমান বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ্ ইউএনও ছিলেন।সেখানকার একটি শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছিল যে দুটি চিত্র, সে দুটি চিত্র দিয়েই আমন্ত্রণপত্রটির সামনে আর পিছনের কভার করা হয়েছিল।নি:সন্দেহে এটি একটি গ্রেট আইডিয়া।পেছনের কভারে যে শিশুটি ছবিটি এঁকেছে সে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।ঘটনাটির কয়েক মাস পর ৭ই জুন মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।মামলার বাদী বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড: ওবায়দুল্লাহ্ সাজু।তিনি একই সঙ্গে বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপতিও।এর মধ্যে ইউএনও বদলি হয়ে বরগুনায় চলে যান।বরগুনার যাবার পর পরই তার নামে মামলা হয়।২৬শে জুলাই সেই মামলায় জামিন চাইতে গেলে বিচারক মো: আলী হোসাইন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলে পাঠিয়ে দেন।পুলিশ তাকে হাতকড়া লাগিয়ে জেলে নিয়ে যায়।ওই শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবিটি আসলে কতটা বিকৃত হযেছে? এরই মধ্যে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ শাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।বড় বড় শিল্পীরাও দেখেছেন কেউই বিকৃত বলেননি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও ছবিটি দেখেছেন। তিনি ্এও বলেছেন, ছবিটি পুরস্কার পাওয়ার মত একটি ছবি।কতটা হৃদয় বিদারক, কতটা মর্মান্তিক।ফটোগ্রাফি আর চিত্রাঙ্কানের পার্থক্যটাই তো ঐ মূর্খ লোকগুলোর বোধগোম্যের বাইরে।আপনার যারা বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিনের আঁকা ছবিগুলো দেখেছেন সেই সব ছবিটার কোনটাই কি ফটোগ্রাফির মতো পূর্ণাঙ্গ মনে হবে? তাঁর আঁকা বঙ্গবন্ধুর এমন কিছু ছবি আছে যেখানে বঙ্গবন্ধুর চোখ, নাক, কপালও ঠিকমত বোঝা যায় না।তাহলে কি তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা হবে? ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। তারিক সালমানকে গ্রেপ্তারের ঘটনা প্রচার হওয়ার পর অনেকেই এর তীব্র সমালোচনা করেছেন, সাজুর নিন্দায় অনেক আওয়ামীলীগ নেতাকেও সোচ্চার হতে দেখছি।প্রিয় পাঠক, তাহলে এতদিন এই লোকগুলো কোথায় ছিলেন? মামলা তো হয়েছে দেড় মাসেরও বেশী সময় আগে।কেন্দ্রীয় নেতাদের কথা না হয় নাই বললাম, জেলার নেতারা তখন কোথায় ছিলেন? কেউ তো তখন সাজু’র অপকর্মে বাঁধা দেননি? প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইট টি ইমাম এর জন্য দোষারোপ করেন বরিশালের ডিসি এবং এসপিকে।তারা থাকতে এমন ঘটনা কি করে ঘটলো, তা জানতে চেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।জানা যায়, আগৈলঝাড়ায় ইউএরও থাকাকালে তারিক সালমানের কি কি পদক্ষেপের কারণে তার উপর আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতা ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তাও বের হয়ে এসেছে এক এক করে।কেবল নানা লুটপাটের প্রতিবন্ধকতাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে তারিক সালমান সেই নেতাদের ব্যাক্তিগত রোষানলেও ছিলেন।আর সে-ই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছিল তারা ওবায়দুল্লাহ সাজু’র মাধ্যমে।বিভিন্ন জেলায় সরকার দলীয় আইনজীবীদের দাপটটা যে কতটা প্রবল আমাদের মত দেশে আশারাখি তা  নতুন করে বলার আর অপেক্ষা রাখে না। মামলাটি নিয়েও বিভ্রান্ত হতে হয়।বাদী সাজু মামলা করেন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে।বঙ্গবন্ধুর ছবিটি যদি ‘বিকৃত’-ই হয়, তাহলে ছবিটি এঁকেছে পঞ্চম শ্যেণরি এক ছাত্র।আর সেই ছবিটি আমন্ত্রণপত্রের শেষ প্রচ্ছদে ছাঁপানোর সিদ্ধান্তটা ছিল শুধু ইউএনও’র।ভুল বা ক্ষতি হয়ে থাকলে তাদের হয়েছে এখানে আইনজীবীদের নেতা সাজু’র ক্ষতির সুযোগটা কোথায়? তার ক্ষোভটা ঠিক কোন কারণে-বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ‘বিকৃতির’ কারণে, নাকি  ছবিটা দেখার পর তার তার হৃদযন্ত্র উল্টাাপাল্টা আচরণ করেছে তার জন্য।যদি বঙ্গবন্ধুর ছবিটির বিকৃতির কারণেই হয়ে থাকে তাহলে শুধুমাত্র ৫ কোটি টাকাই বা কেন? ৫ কোটি টাকা পেলে কি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির যে কোন বিকৃতিই কি তাহলে গ্রহণযোগ্য?

 

 




Archives
Image
চীন সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে : ড. ইউনূস
Image
বরিশালে ছিনতাই মামলায় ছাত্রদল নেতা কারাগারে
Image
নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে বরিশালে কঠোর অবস্থানে বিআরটিএ
Image
ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সন্‌জীদা খাতুন আর নেই
Image
সচিবালয় এলাকায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত ৪০