|
ঘটনাস্থল পল্লবীতে এখনো পুলিশ রয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে
দুই সন্তানকে হত্যার পর নিজের গলায় ছুরি চালালেন বাবা
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর পল্লবীতে দুই শিশু সন্তানকে গলাকেটে হত্যার পর নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন মো. আহাদ (৪০) নামের এক ব্যক্তি। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহত শিশুদের মধ্যে রেহানের বয়স সাত বছর।
এছাড়া রেহানের ছোটভাই মুসার বয়স তিন বছর। শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়ে পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজেদুল বলেন, আজ শনিবার সকালে আমাদের কাছে সংবাদ আসে পল্লবীর বাইগারটেকে এক বাসায় দুই ছেলেকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে এবং ছেলের বাবা নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। পরে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এসআই মাজেদুল আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি ঘাতক বাবা আহাদ তার সাত বছর ও তিন বছরের দুই ছেলে সন্তানকে ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেন। তাদের হত্যা করার পর তিনি নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে এখনো পুলিশ রয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
দুই সন্তানকে গলাকেটে হত্যা: সংসারে অভাব না অন্যকিছু?
বাড়ির মালিক, প্রতিবেশী, এলাকাবাসী বা পুলিশ কেউই হত্যার কারণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারছেন না। বাবা আহাদ মোল্লা অভাবের কারণে সংসারে ঝগড়াবিবাদ বা ওই ধরনের মানসিক চাপে ছিলেন কি না, সে সম্পর্কেও কেউ কিছু বলতে পারেন না। পুলিশ বলছে, তদন্ত ছাড়া সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা যাবে না। আহাদ মোল্লা ও তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার দুই শিশুপুত্র রোহান ও মুসাকে নিয়ে পল্লবীর বাগেরটেক এলাকার একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলায় বাস করেন। আহাদ মোল্লা কখনো বাসাবাড়িতে নিরাপত্তার কাজ করেন, কখনো রিকশা চালান। রোজিনা আক্তার মেসে রান্না করেন। হত্যার শিকার দুই সন্তানের মা রোজিনা আক্তার জানান, শনিবার সকালে আহাদ কাজ শেষে বাসায় আসেন। মা সকালে দুই সন্তানকে বাবার কাছে রেখে মেসে রান্না করতে যান। এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি কক্ষে বাবা চাকু দিয়ে দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর নিজে গলায় ছুরি চালান। পরে খবর পেয়ে তিনি বাসায় ছুটে আাসেন। বেলা ২টার দিকে পল্লবী থানা পুলিশ শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। অভিযুক্ত বাবা আহাদ মোল্লাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশি তাহমিনা বলেন, তাদের বড় ছেলে বাসার সামনে খেলছিল। সেখান থেকে ডেকে নিয়ে যায় রোহানের বাবা। ছোট ছেলে বাসায় ছিল। পরে তাদের নানার চিৎকারে জানতে পারি বাচ্চা দুটিকে গলা কেটে হত্য করা হয়েছে। বাগেরটেক এলাকার ওই বাড়ির মালিক মো. নাসির বলেন, আহাদ মোল্লা তার পরিবার নিয়ে আমার বাড়িতে দুই মাস যাবত বাস করে আসছিলেন। তাদের কোনো খারাপ কিছু আমার চোখে পড়েনি। আহাদ বিভিন্ন কাজ করতেন। কখনো রাজমিস্ত্রি, রিকশাচালক বা দারোয়ানের। পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আদিল হোসেন বলেছেন, পারিবারিক কলহ ও অভাব অনটনসহ বিভিন্ন বিরোধের জেরে হতাশা বা মানসিক অসুস্থতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহাদ মোল্লাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের পরেই জানা যাবে প্রকৃত ঘটনাটা কী।
Post Views:
৮২
|
|