|
দলমত নির্বিশেষে এই নগরীর মানুষ তাঁকে স্মরণ করে তাঁর কাজের জন্য-গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল
তুমি রবে নিরবে-বরিশালের হিরন, তোমায় কোনদিনই ভুলবে না বরিশালবাসী
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : যেন লাল ইট-সুরকির দাঁতগুলো ভয়ানক ভঙ্গিতে হাঁ করে আছে যানবাহনের চাকায় কামড় বসানোর জন্য। ভাবতে ভাবতেই চোখের সামনে খাদের ভেতর আটকে যায় বৃদ্ধ চালকের রিকশা। টেনে তুলতে তুলতে এক রিক্সাচালক বলেন, ‘এই রাস্তাডা ওরসারেই (পুরাপুরি) এইরহম খানাখন্দে ভইর্যা গ্যাছে। গাড়ি-রিকশা চালাইন্যা তো দূরের কথা, মানুষ যে ঠিকমতো আইট্টা যাইবো হেই উপায়ও নাই।’ বরিশাল নগরীর কাশিপুর চৌমাথা থেকে পশ্চিম কাউনিয়ার দিকে যেতে এস এম রহমত উল্লাহ সড়কের প্রবেশ মুখের মাঝ সড়কে পড়তে হয় এই দশায়। সামনে এগোতে যত দূর চোখ যায় একই রকম অসংখ্য খাদ। বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের এই একটি সড়কই নয়, কাছেই ১ নম্বর ওয়ার্ড, নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশজুড়ে থাকা বর্ধিত এলাকার ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের পথে পথেই থমকে যেতে হয় ভাঙাচোরা সড়কের খাদের কাছে। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর বারইজ্যার হাট-গণপাড়া সড়কে এমনই এক খাদের পাশের এক বাসিন্দা বলেন, ‘মুই বাবা কোনো দল হরি না, তয় আগের মেয়র হিরণ মিয়া বাঁইচ্যা থাকলে হেরে একখান ভোট দিতাম, কারণ এই রাস্তাগুলান হের আমলেই সুন্দর-চকচইক্যা কইর্যা বানাইন্যা অইছিল। খালি এই রাস্তাই না বরিশাল শহরডারেই মুরামুরি কি সুন্দর হইর্যা থুইয়া গ্যাছে! কিন্তু গত পাঁচটা বছর ধইর্যা মোগো কোনো মেয়র আছে বইল্যা মনে হরতে পারি নাই।’ জনৈক আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘খালি কি রাস্তা, বর্ধিত এলাকার বাসিন্দা হিসেবে আমরা বলতে গেলে সিটি করপোরেশনের কোনো সুযোগ-সুবিধাই পাচ্ছি না। বরং উল্টো ট্যাক্স বাড়ছে, পানির লাইন না থাকলেও লাইনের খরচ আর বিল দিতে হয়।’ মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, ‘আমরা যে যাই বলি না কেন, এবারের সিটি নির্বাচনে প্রয়াত শওকত হিরণ আমাদের নৌকা মার্কাকে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রাখছেন। দলমত নির্বিশেষে এই নগরীর মানুষ তাঁকে স্মরণ করে তাঁর কাজের জন্য।’ সব কিছু ছাপিয়ে আসন্ন ভোটকে কেন্দ্র করে প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণের কেন এত প্রশংসা তা জানার চেষ্টায় নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে লোকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা নানা ধরনের দৃশ্যমান সৌন্দর্যবর্ধন, রোড প্রশস্ত ও ডিভাইডার বসানো, চার লেন সড়ক, সড়কবাতি, কাঞ্চন পার্ক, চৌমাথা, বিবিরপুকুর, রাজাবাহাদুর, বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়াম, বঙ্গবন্ধু উদ্যান, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, নৌবন্দরের সৌন্দর্যবর্ধন, শহররক্ষা বাঁধ, হিরণ পয়েন্টের মতো কাজের উদাহরণ দেখিয়ে দেয়। নগরবাসীর প্রয়াত হিরণকে নিয়ে এই আবেগের অনুভূতি দেখে মনে হয়, তারা এবারের ভোটে প্রার্থীদের মধ্যে তাঁর মতো একজনকে খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবে। ভোগান্তি দূর করে নগরীর উন্নয়নই তাদের প্রত্যাশা। এবারের নির্বাচনে এই সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার এবারও নিজ দলের মনোনয়নে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। মেয়র প্রার্থী আছেন আরো পাঁচজন।

Post Views:
০
|
|