এ পর্যন্ত ১৭টির মতো হামলা ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এর কোনটির সুষ্ঠ বিচার হয়নি
তিন দফা দাবিতে বরিশাল শেবাচিমে ইন্টার্নদের সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি চলছে। বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে ১১ টা থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতির পক্ষে তিনি দফা দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইন্টার্ন ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন। শুক্রবার (২৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে হাসপাতালের অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনে দাবির বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি ডা. রাজু আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক ডা. নাহিদ হাসান। এসময় তারা বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসকরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। কিছু হলেই রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকদের ওপর হামলা করছে। এ পর্যন্ত ১৭টির মতো হামলা ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এর কোনটির সুষ্ঠ বিচার হয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ শাকিলের স্ত্রী খাদিজা (২২) মুমূর্ষু অবস্থায় ভর্তি করা হয়। তিনি ছিলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ও অ্যাকলামশিয়া রোগে আক্রান্ত। তার প্রেসার খুবই বেশি ও অচেতন থাকায় জরুরি অপারেশন করা সম্ভব হয়নি। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রোগীটি অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। এ অবস্থায় রোগীর স্বজনরা আমাদের চিকিৎসকদের ওপর হমালা চালায় এবং তিন চিকিৎসকে জখম করে। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারের আশে পাশে বেশ ভাঙচুর করে। এই হামলার ঘটনায় স্বজনদের বিচার, সরকারি ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের ক্ষতিপূরণ চাই, দিতে হবে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের নিরাপত্তা জোরদারের দাবিও জানান তারা। তিন দফা দারির কথা উল্লেখ করে বলেন, হাসপাতালে সার্বক্ষণিক পুলিশের টিম থাকবে। চিকিৎসা অবহেলা হলে রোগী বা স্বজনরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দিবে। তারা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিবেন। তাছাড়া চিকিৎসকরা অভিযুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিএমডিসি ব্যবস্থা নিবেন। এ আন্দোলন শুধু ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। তারা ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসকরা তাদের কর্মস্থলে রোগীর সেবা নিয়মিত দিয়ে যাবেন। আর দাবি না মানা পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে ঘোষনা দেন তারা। এদিকে শুক্রবার (২৩ মার্চ) সকাল থেকে হাসপাতালের মধ্যখানের গেট বন্ধ রেখে শুধু জরুরি বিভাগের গেট খোলা রেখে রোগী ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. আবদুল কাদির বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। রোগীর স্বজনদের দাবি ছিলো সময় মতো রোগীর অপারেশন করা হয়নি। কিন্তু ওই রোগীর প্রেসার খুবই বেশি ছিলো। এমন রোগীর অপারেশন করা যায় না। তাই রোগী মুমূর্ষু থাকায় মারা গেছেন। কিন্তু স্বজনরা চিকৎসকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কোতয়ালি থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইন্টার্নদের নিয়ে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের চেস্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।