|
যাত্রী নিরাপত্তায় লঞ্চ ও নৌ-বন্দরে সিসি ক্যামেরা
জনগণকে শান্তিপূর্ণ ঈদ উপহার দিতে সজাগ বরিশালের প্রশাসন
বরিশালে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঘরফেরা মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত ও নগরবাসীকে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ পালনে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১১ টায় নগরের চাঁদমারীস্থ পুলিশ অফিসার্স মেসের সভা কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।এতে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন।সভায় জেলা বাস-মালিক সমিতির নেতারা বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের সংস্কার, বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতি মহাসড়কে থ্রি হুইলার বন্ধের দাবি তুলে ধরেন।এসময় থ্রি-হুইলার (মাহিন্দ্রা) মালিক সমিতির নেতারা মেট্রোপলিটন এলাকায় তাদের যানবাহন চালাচলে বাস মালিক সমিতির নেতাদের বাধা না দেওয়ার আহ্বান জানান।অপরদিকে লঞ্চ মালিক সমিতি ঘরমুখো ও ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ করার আশ্বাস দেন।এসময় তারা লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করার বিষয়েও আশ্বাস দেন।পাশাপাশি নাগরিক সেবা প্রদানকারী বিদ্যুৎ বিভাগ, সিটি করপোরেশন, বিআইডব্লিউটিএ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, নৌ-পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা কোরবানির ঈদ নিয়ে তাদের প্রস্তুতির বিষয়ে অবহিত করেন।সভায় উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, নিরাপদে যাত্রাবাহী যানবাহন চলাচলে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ, বাসে ও লঞ্চে যাত্রীদের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরার ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকায় স্থাপিত সিসি ক্যামেরা চালু রাখা, নিয়মতান্ত্রিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ঈদ উৎসব ও কোরবানির হাটকে ঘিরে জাল টাকা রোধ, চুরি-ছিনতাইসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা জোরদার করা প্রমুখ।ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাত্রায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন বলেন, যাতে যাত্রীরা হয়রানির শিকার না হয় এবং নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন।পাশাপাশি অজ্ঞান-পার্টি ও প্রতারকচক্রের বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।সভায় উপস্থিত ছিলেন-ডিজিএফআইয়ের বরিশাল প্রধান কর্নেল শরীফ, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার, গোলাম রউফ, উত্তম পাল, হাবিবুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের চাপ সামলাতে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে সরাসরি ৩৫টি নৌযান বিশেষ সার্ভিস দেবে।সরকারি-বেসরকারি এসব নৌযান ঢাকা-বরিশাল পথে আগামী ২৭ আগস্ট থেকেই বিশেষ সার্ভিস শুরু করবে এবং তা চলবে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।বিআইডব্লিউটি-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র এ তথ্য জানায়।সূত্র জানায়, এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বেসরকারি মালিকানার ২৯টি এবং সরকারি বিআইডব্লিউটিসির ছয়টি নৌযান প্রস্তুত করা হয়েছে।এর মধ্যে প্রথমবারের মতো নৈশকালীন সার্ভিসে যুক্ত হচ্ছে অ্যাডভেঞ্চার নামে দ্রুতগামী একটি নৌযান-১ ও আধুনিকায়ন করা সুন্দরবন-১১।বিআইডব্লিউটি-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের বরিশাল কার্যালয়ের উপপরিচালক আজমল হুদা সরকার জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য লঞ্চে ও বন্দরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি নৌ-পুলিশ, সাদা পোশাকধারী পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, মেরিন ভলান্টিয়ার ও স্কাউট সদস্যরা বন্দর এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন।এ ছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের পথগুলোতে বাল্কহেড ও কার্গো চলাচল নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।এ ছাড়া সরকারি নৌযান সংস্থার ছয়টি নৌযান বিশেষ সার্ভিসের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর থেকে চারটি নৌযান বরিশাল নদীবন্দর হয়ে চলাচল করে।ঈদের সময় যাত্রীদের ভিড়ের কারণে এই চারটি নৌযানকে বরিশাল নদীবন্দরে যাত্রাবিরতি না দিতে বলা হয়েছে।এ ছাড়া পিরোজপুর থেকে ঢাকাগামী লঞ্চগুলো বরিশালের বানারীপাড়া, উজিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যাত্রাবিরতি দিয়ে চলাচল করবে।পাশাপাশি বাবুগঞ্জ, মুলাদি, হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ থেকে চলাচলরত নৌযানগুলোও ঈদে বিশেষ সার্ভিস দেবে।বরিশাল বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, এমভি মধুমতি ও এমভি বাঙালি জাহাজের পাশাপাশি রকেট সার্ভিসে পিএস মাহসুদ, লেপচা, টার্ন, অস্ট্রিচসহ ছয়টি নৌযান ঈদের বিশেষ সার্ভিসে যাত্রীসেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
Post Views:
১৪৮
|
|