|
নতুন দৃশ্যমান মসজিদটি তিনশ বছর আগের বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা
চাঁদপুরে মিলল সুলতানি আমলের প্রাচীন মসজিদের সন্ধান
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদার বাড়ি এলাকায় মসজিদটির অবস্থান। ২৯ আগস্ট বুধবার বিকেলে মসজিদটির সন্ধান মেলে। বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা জঙ্গল পরিষ্কার করে মসজিদটি দৃশ্যমান করেছেন। এলাকাবাসীর ধারণা মসজিদটি সুলতানি আমলে তৈরি। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন পাটওয়ারী বলেন, জঙ্গলের ভেতর একটি মসজিদ পাওয়া গেছে-এ তথ্য পেয়ে আমি মসজিদটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি, এটি এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ। দেয়াল ঘেঁষে চারপাশে চারটি ছোট মিনার রয়েছে, বাইরের দৈর্ঘ্য ১৬ ফুট এবং এর প্রস্থ ১৫ ফুট। মসজিদটির ভেতরের দৈর্ঘ্য আট ফুট ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থ সাত ফুট তিন ইঞ্চি। মসজিদটির একটি মেহরাব এবং দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোপ রয়েছে। দেয়ালের দূরত্ব প্রায় ৩৩ ইঞ্চি। পোড়া ইট, বালি, চুন এবং সুরকি দ্বারা ভবনটি নির্মিত। আল মামুন পাটওয়ারী আরও বলেন, এলাকার প্রয়াত মুরব্বিরা জানিয়েছিলেন সেখানে একটি পুরনো স্থাপনা আছে। কিন্তু কেউই সেখানে যেতেন না। কারণ, মসজিদটির উপরে একটি বিশাল জির গাছ ও তার শেকড়, বাঁশঝাড়, অন্যান্য বনলতা, যা ভবনটির বাইরের অংশকে ঢেকে রেখেছিল। পরে আজিজ তালুকদার নামে এক ব্যক্তি ১০-১২ বছর আগে জির গাছটি কেটে সেটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তা করতে পারেননি । কারণ, এটি এতই ভেতরে ছিল যে সম্পূর্ণ মসজিদটিকে দৃশ্যমান করা তার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তিনি অবশ্য স্থানীয় লোকজনকে স্থাপনাটি সম্পর্কে জানান। কিন্তু ভয়ে কেউ মসজিদটিকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেননি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি বিষয়টি জানার পর এটিকে দৃশ্যমান করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। ২০-২৫ বছর আগে এ মসজিদের পাঁচ কিলোমিটার দূরে উলিপুর গ্রামে একই রকম দুটি মসজিদের সন্ধান পাওয়া যায় বলে জানান স্থানীয়রা। নতুন আবিষ্কৃত মসজিদের গায়ে কোনো লেখা না পাওয়া গেলেও ওই দুটি মসজিদের শিলালিপিতে সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলের কথা উল্লেখ ছিল। নতুন দৃশ্যমান মসজিদটি তিনশ বছর আগের বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতরের ঢাকা জোনের পরিচালক রাখি রায় ওই গ্রামেরই সন্তান। তিনি জানান, জঙ্গল পরিষ্কারের আগে গত মঙ্গলবার স্থানীয় চেয়ারম্যান তাকে মসজিদ এলাকায় নিয়ে যান। মসজিদটি সুলতানি আমলের বলে ধারণা করছেন তিনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য আবেদন করলে মসজিদটি সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান রাখি রায়। এ ব্যাপারে চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. শওকত ওসমান বলেন, মসজিদটি সম্পর্কে আমরা অবহিত হয়েছি। জেলা প্রশাসনের একটি টিম ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। এলাকাবাসীর মতে এটি সুলতানি আমলের মসজিদ বলে ধারণা করছি। মসজিদটি রক্ষায় যা যা করণীয় তার সবটাই করব।
Post Views:
৯৭৯
|
|