|
নগরভবনে নেই কোন রেকর্ড রুম-মেয়রের দুঃখ প্রকাশ
কোনো দূর্ণীতির দায়ভারকে আমি প্রশয় দেব না-মেয়র সাদিক
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেছেন, বিগত দিনে বিসিসিতে পুকুর চুরি নয়, সাগর চুরি হয়েছে। জনগণের টাকায় সিটি কর্পোরেশনের বিগত পরিষদগুলো জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বিভিন্ন খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। বিভিন্ন শাখার হিসেবের গরমিল অডিট করা, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, সদর রোডের সিটি মার্কেট, বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়াম, সিসি ক্যামেরা এবং সেবক কলোনী নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের চতুর্থ পরিষদের প্রথম সভায় মেয়র এসব কথা বলেন। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, বাইরে থেকে সিটি কর্পোরেশন দেখতে যেমন ভেতরে তার চেয়েও খারাপ অবস্থা। এখানে কোনো রেকর্ড রুম নেই। কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, কত টাকা রাজস্ব আদায় হয়, কি পরিমাণ সম্পদ আছে তা কেউ জানেন না। আগে তাদের বেতন দেয়া হতো নগদ টাকায়। এখন থেকে আমি ব্যাংক একাউন্ট কিংবা চেক ছাড়া কোনো নগদ টাকায় বেতন-ভাতা পরিশোধ করবো না। কারণ আমি কোনো দূর্ণীতির দায়ভার নেব না। তিনি আরও বলেন, একটা পরিকল্পিত নগরী গড়তে দক্ষ জনবল প্রয়োজন। সিটি কর্পোরেশনে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ২ হাজার ৬০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে। কিন্তু বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে দক্ষ জনবল দেখছেন না। যারা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে আছেন, তারা সেই পদের যোগ্য কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, টাকা কামানোর জন্য আমি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন করিনি। যারা সিটি কর্পোরেশনকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মনে করছেন তাদের আগেভাগেই বিদায় হতে বলেন তিনি। তিনি বলেন, কমপক্ষে ৪ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে যারা রাস্তা নির্মাণ করতে পারবেন তাদের দিয়ে রাস্তাঘাট নির্মাণ কাজ করানো হবে। নইলে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব জনবল দিয়ে রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হবে। মেয়র সাদিক বলেন, নগরীর চারপাশ দিয়ে ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রিং রোড নির্মাণ এবং সিটি কর্পোরেশনের আয়তন বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারি প্রয়োজন ছাড়া নগরীর মধ্যে কোনো রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেজার পাইপ বসাতে না দেয়া এবং নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল ও বিবিরপুকুর পাড়ে কোনো বিলবোর্ড ব্যানার স্থাপন করতে না দেয়ার কথাও জানান তিনি। বিসিসির সদ্য যোগদানকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল আলমের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ পরিষদের সভায় বিসিসির প্রধান প্রকৌশলী খান মো. নুরুল ইসলাম ছাড়াও ৪০ জন সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। যদি কেউ এই আইন অমান্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। নগরীকে সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে নগরবাসীর সহযোগীতাও কামনা করেন তিনি। নগরবাসী যদি তাকে সহযোগীতা করে তাহলে তিনি সুন্দর একটি বরিশাল নগরীর উপহার দিবেন বলেও ঘোষনা দেন। সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আয় দিয়েই বিসিসির কার্যক্রম চালানো যায়। কিন্তু বিগত দিনে বিসিসিতে আয় ঠিকই হয়েছে, ব্যায়ের ব্যাপারে কোন নির্দেশনা ছিলো না। যে যার মতো করে ব্যায় করেছে, যার কোন হিসেব নেই। এমনকি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে কোন রেকর্ড রুম নেই বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। যদি বিসিসির কর্যক্রম রেকর্ড করে না রাখা হয় তাহলে হিসাব মিলাবে কি করে। বিগত দিনে কোন রেকর্ড রাখা হয়নি বলেই বিসিসিতে যত দূর্ণীতি হয়েছে। রেকর্ড থাকলে আর এমনটা হতো না।
Post Views:
৮৯৮
|
|