|
সামান্য পরিশ্রম ও আর্থিক সহযোগীতা পেলে দারিদ্রতাকে পিছু ঠেলে জীবনের চাঁকা ঘুরিয়ে নেয়া সম্ভব
কৃষিতে স্বাবলম্বী বরিশালের রাশিদা বেগম
কৃষি কাজ করে অভাবমুক্ত সংসার ও ক্ষুধামুক্ত জীবন গড়ে আজ পুরোপুরি স্বাবলম্বী হয়েছেন বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার কালিহাতা গ্রামের রাশিদা বেগম। দারিদ্রজয়ী স্বাবলম্বী রাশিদা বেগম বলেন, গত কয়েক বছর পূর্বেও তার স্বামী আব্দুস ছালাম সরদার গ্রামের বিভিন্ন মানুষের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে আট সদস্যর সংসার চালাতেন। স্বামীর একমাত্র সামান্য আয়ে তাদের সংসারে অভাব অনটন লেগেই ছিলো। একসময় তিনি স্বামীর পাশাপাশি বাড়তি আয়ের জন্য নিজেও কিছু করার চিন্তা করেন। ফলশ্রুতিতে তার সাথে পরিচয় হয় বরিশাল ডেভলভমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) এর উন্নয়ন কর্মী মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে। তার সহযোগীতা ও পরামর্শে বিডিএস’র কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তিনি (রাশিদা) বাড়ির পাশ্ববর্তী ১.৬০ একর জমি লিজ নিয়ে সেখানে সরিষা, টমেটো, লাউ, করল্লা, কুশিসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ শুরু করেন। রাশিদা আরও জানান, চলতি মৌসুমে তিনি তার টমেটো খেত থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। সফল নারী রাশিদা বেগমের স্বামী আব্দুস ছালাম সরদার বলেন, কয়েকবছর আগেও অভাবের সংসারে আমাদের খেয়ে না খেয়ে কোনমতে দিনাতিপাত করতে হয়েছে। বর্তমানে অভাব নামের শব্দটি আমাদের জীবনে নেই। তিনি আরও জানান, তার স্ত্রীর পরামর্শে তিনি অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ ছেড়ে দিয়ে নিজেদের লিজ নেয়া জমিতে আগাম সবজি চাষ করেছেন। তারা স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই সমানভাবে জমিতে কাজ করে অভাবকে দূর করে মাত্র দুইবছরেই সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। তাদের সন্তানরা আজ স্কুলে পড়াশুনা করছে। আগে দুইবেলা আধপেটা খেয়ে তাদের জীবন চললেও এখন সেসব অতীত। তারা এখন ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা করিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখছেন। বিডিএস’র বাটাজোর শাখার শাখা ব্যাবস্থাপক মোঃ রাশেদ খান বলেন, রাশিদা বেগমের জীবন থেকে আমরা শিখতে পারি সামান্য পরিশ্রম ও আর্থিক সহযোগীতা পেলে দারিদ্রতাকে পিছু ঠেলে জীবনের চাঁকা ঘুরিয়ে নেয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেন, দারিদ্রজয়ী রাশিদা বেগমের ন্যায় যেকোন দুঃস্থ নারীকে স্বাবলম্বী করার জন্য তারা প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শামীম আহমেদ, অতিথি প্রতিবেদক
Post Views:
১,৯১৪
|
|