Current Bangladesh Time
শনিবার সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪ ১১:৫১ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » কবি জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি এখন প্রাণহীন খাল 
Thursday February 8, 2018 , 6:12 pm
Print this E-mail this

বর্ষা মৌসুমে নৌকা চলাচল করলেও শীত মৌসুমে তা শুকনো খালে পরিণত হয়

কবি জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি এখন প্রাণহীন খাল


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়।’কবি জীবনানন্দ দাশের যে কবিতার জন্য ধানসিঁড়ি নদী বিশ্বব্যাপী বাংলাভাষী পাঠকের কাছে সমাদৃত-সেই নদী আজ বিপন্ন। ধানসিঁড়ি এখন প্রাণহীন। দূরদূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থী ধানসিঁড়ি নদী দেখতে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অবৈধ দখল ও নদীখনন প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে মরতে বসেছে ধানসিঁড়ি। এছাড়া নদীর তলদেশে পলি জমে শীত মৌসুমে পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে একসময়ের খরস্রোতা এ নদী। প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ ধানসিঁড়ি নদীতে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার ইতিপূর্বে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কখনো পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় খালখনন কর্মসূচি কখনো বেড়িবাঁধ নির্মাণ কর্মসূচি। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, ধানসিঁড়ি রক্ষা প্রকল্পগুলোর নামে বরাদ্দকৃত টাকা লুটপাটই হয়েছে। কোনো প্রকল্পই ধানসিঁড়িতে প্রাণ ফেরাতে পারেনি। এর প্রধান কারণ লুটপাট, দুর্নীতি ও প্রকৃতি নিজেই-এমনটাই বলছেন ধানসিঁড়ি পাড়ের বাসিন্দা তমিজউদ্দিন হাওলাদার, কৃষক আনোয়ার হোসেন ও ছালেহা বেগমসহ অনেকে। ধানসিঁড়ি নদী ও কবিকে নিয়ে গবেষণা করা প্রাক্তন অধ্যাপক সোহরাব হোসেন জানান, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে মোল্লাবাড়ী, বাড়ৈবাড়ী পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাজাপুর উপজেলার হাইলকাঠি, ইন্দ্রপাশা ও বাঁশতলা গ্রামের বুক চিড়ে ৫.৬ কিলোমিটার পথ মোট ৮.৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে রাজাপুরের জাঙ্গালিয়া নদীর মোহনায় মিলেছে ধানসিঁড়ি। কবি এই জাঙ্গালিয়া নদীকে কবিতায় জলাঙ্গী বলেছেন। এলাকাবাসী বলছেন, দুই যুগ আগেও ধানসিঁড়ি নদী দিয়ে পালতোলা নৌকা, লঞ্চ, কার্গো সবই চলাচল করত। রাজাপুর থেকে ঝালকাঠি জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল এই ধানসিঁড়ি। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি কৃষিতেও বড় অবদান রাখত এই নদী। তবে নদীর তলদেশে পলি ভরাট ও দখলবাজদের ছোবলে আস্তে আস্তে সেই নদী বিলীন হয়ে এখন সরু খালে পরিণত হয়েছে। সেই ধানসিঁড়ি এখন নৌকা চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে নৌকা চলাচল করলেও শীত মৌসুমে তা শুকনো খালে পরিণত হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৩ সালে ধানসিঁড়ির পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে খাল খননের জন্য ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। খাল খনন ও নদীর দুপাড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তবে সেই প্রকল্প ধানসিঁড়িতে প্রাণ ফেরাতে পারেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল খননের প্রকল্পের টাকা পকেট ভারী করেছে কিছু ক্ষমতাবান মানুষের। খালের দুইপাড় পরিষ্কার ও কিছু কাদামাটি উঠিয়ে খালের পাড়ে রাখা ছাড়া আর কোনো কাজে আসেনি সেই বরাদ্দকৃত টাকা। অল্পদিন না যেতেই সেই মাটি বর্ষার পানিতে ধুয়ে আবার নদীতে ফিরে গেছে। এ বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাজাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিয়াজ উল্লাহ্ বাহাদুর বলেন,“ধানসিঁড়ির দুপাড়ে শত শত হেক্টর ফসলি জমি থাকলেও নদীতে পানিপ্রবাহ না থাকায় কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারছেন না। নদীটিতে যদি পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখা যেত তাহলে ধান ও রবিশস্যের ব্যাপক আবাদ করা যেত।”এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা বেগম পারুল বলেন,“ধানসিঁড়ি নদীর সঙ্গে বহু ইতিহাস আর ঐতিহ্য সম্পৃক্ত। তাই ধানসিঁড়ি পুনঃখননের জন্য আবারও পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর সুপারিশপত্র দেয়া হবে। বরাদ্দ পেলেই খনন কাজ শুরু হবে।”




Archives
Image
সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, ঝড়ের শঙ্কা, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত
Image
ঝালকাঠিতে ডাকাতি ও হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কুপিয়ে হত্যা
Image
মুখ খুললেন ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের অ্যাডমিন শামীমা তুষ্টি
Image
আড়াই ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
Image
সীমান্তে পিঠ দেখাবেন না : বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা