প্রচ্ছদ » স্লাইডার নিউজ » আমতলীতে কলেজছাত্রী ৭ টুকরোতে ব্যবহৃত সেই চাপাতি ও ছেনা উদ্ধার
Sunday November 5, 2017 , 5:14 pm
বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে পলাশ মালাকে ধারালো বডি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে
আমতলীতে কলেজছাত্রী ৭ টুকরোতে ব্যবহৃত সেই চাপাতি ও ছেনা উদ্ধার
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরগুনার আমতলীতে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্রী মালা আক্তারকে (১৭) হত্যার পর লাশ ৭ টুকরো করে ড্রামে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় আসামি এ্যাড: মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারকে অতিরিক্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পর চতুর্থ দিনে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাসার পুকুর থেকে খুনের পর লাশ ৭ টুকরা করার কাজে ব্যবহৃত ১টি ধারালো চাপাতি ও ১টি ছেনা উদ্ধার এবং খুনের আগে মালাকে বহনকারী বিপ্লবের মোটর সাইকেলটিও জব্দ করে আমতলী থানা পুলিশ।কলেজ ছাত্রী মালা আক্তার (১৭) খুনের অন্যতম আসামি হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা এবং যে ঘড়ে মালা খুন হয়েছিল ওই ঘড়ের মালিক এ্যাড: মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারকে অধিকতর জিজ্ঞাশাবাদের জন্য গত ৩১ অক্টোবর ৫ দিনের রিমান্ডে ন্যায় পুলিশ।১ নভেম্বর থেকে ৫ দিনের রিমান্ডে থাকা বিপ্লব চতুর্থ দিন শনিবার (০৪ নভেম্বর) অনেক গুরুত্ব পূর্ন তথ্য দেয় পুলিশকে।পুলিশ তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী শনিবার সকাল সোয়া ১২ টা দিকে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: সহিদুল্যা ও ওসি তদন্ত মো: নুরুল ইসলাম বাদলের নেতেৃত্বে একদল পুলিশ বিপ্লবের বাসার পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত পুকুরে অভিযান চালায়।এসময় ওই পুকর থেকে একটি ধারালো চাপাতি এবং একটি ধারালো ছেনা উদ্ধার করে।উদ্ধার কাজে সহায়তা করে বিপ্লবের বাসার ভাড়াটিয়া মো: শহিদুল ইসলাম খান ও আনোয়ার হোসেন মুসুল্লী নামে দু’জন।পরে খুনের আগে মালাকে বহনকারী বিপ্লবের মোটর সাইকেলটি তার বাসার সামনের একটি গ্রেজ থেকে জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।বরগুনা সদর উপজেলার ঘুদিঘাটা গ্রামের আব্দুল মন্নান হাওলাদারের মেয়ে এবং কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের একাশ শ্রেণির ছাত্রী মালা আকতারের সাথে পটুয়াখালী জেলার মির্জাঘঞ্জ উপজেলার মজিদ বাড়িয়া ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামের মৃত্যু আ: লতিফ হাওলাদারের ছেলে বরগুনার ঘটবাড়িয়া আদর্শ কলেজের প্রভাষক আলমগীর হোসেন পলাশের সাথে ৭ বছর পূর্বে সপ্তম শ্রেণিতে পরার সময় থেকে মালার সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।মালা পলাশের সম্পর্কে মামাত শ্যালিকা।সম্পর্কের জের ধরে ২২ অক্টোবর পলাশ মালাকে নিয়ে তার ভাগ্নি জামাই আমতলীর হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা এ্যাডভোকেট মো: মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের বাসায় বেড়াতে নিয়ে আসেন।২৪ অক্টোবর সকার ৯টার দিকে মালা আকতার পলাশকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়।বিবাহিত পলাশ মালাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়।বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে পলাশ মালাকে ধারালো বডি দিয়ে জবাই করে হত্যার পর লাশ ৭ টুকরা করে দুটি ড্রামে ভরে বিপ্লবের বাসার গোসল খানায় লুকিয়ে রাখে।খবর পেয়ে পুলিশ বিপ্লবের বাসা থেকে ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টায় লাশ উদ্ধার করে এবং ঘাতক পলাশকে আটক করে।তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাসার মালিক এবং পলাশের ভাগ্নি জামাই এ্যাড: মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারকে ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর রোড থেকে আটক করে।মালা খুনের ঘটনায় ২৪ অক্টোবর গভীর রাতে আমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক ওসি তদন্ত মো: নুরুল ইসলাম বাদল বাদী হয়ে আলমগীর হোসেন পলাশ ও তার ভাগ্নি জামাই বাসার মালিক এ্যাড: মাইনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারসহ আরো ২-৩ জনকে অঞ্জাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদ উল্লাহ।এ ঘটনায় প্রধান আসামি আলমগীর হোসেন পলঅশের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্ধী দেওয়ায় পর অপর আসামি মাইনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারকে ২৫ অক্টোবর আমতলীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: শহিদ উল্লাহ।আদালত ৩১ মে শুনানির দিন ধার্য় করে।৩১ অক্টৈাবর দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালতের বিঞ্জ বিচারক মো: হুমাযুন কবির ১ নভেম্বর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিপ্লবের।রিমান্ডে থাকা অবস্থায় চতুর্থ দিনে এ্যাড: মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদার অনেক গুরুত্ব পূর্ন তথ্য দেয় বলে পুলিশ জানায়।তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার সময় তার বাসার পুকুরে অভিযান পরিচালনা করে ১টি চাপতি ও ১ টি ছেনা উদ্ধার করা হয় এবং খুনের আগে মালাকে বহন কারী বিপ্লবের মটর সাইকেলটি তার বাসার সামেনের একটি গ্রেজ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।রবিবার বিপ্লবের ৫ দিনের রিমান্ড শেষ হবে।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শহিদ উল্লাহ জানান,রিমান্ডে থাকা অবস্থায় এ্যাড: মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদার বিভিন্নভাবে খুনের সাথে জড়িত থাকার অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্য দিয়েছে।তিনি আরো বলেন,মামলার স্বার্থে এগুলো এখন কিছুই বলা যাবে না।আমতলী থানার ওসি ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শহিদ উল্লাহ জানান আসামী আইনজীবী মাইনুল আহসান বিপ্লবের স্বীকারোক্তি অনুসারে শনিবার দুপুরে বিপ্লবের উপস্থিতিতে তার বাসার গোসলখানা সংলগ্ন পুকুরে অভিযান চালাই।এ সময় ওই পুকুর থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।তিনি আরো বলেন,মালাকে আইনজীবী বিপ্লবের বাসায় বেড়াতে আনা তার মোটরসাইকেলটি জব্দ করেছি।