Current Bangladesh Time
শনিবার অক্টোবর ১২, ২০২৪ ১২:০৫ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ তে প্রিয়তম্ উজ্জ্বলের ৩য় কাব্যগ্রন্থ – ” পিতার রাজ্যে আমি মোকছেদ “ 
Saturday February 24, 2018 , 6:45 pm
Print this E-mail this

আমি প্রচারবিমূূখ মানুষ, নিজের জন্য লিখি – প্রিয়তম্ উজ্জ্বল

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ তে প্রিয়তম্ উজ্জ্বলের ৩য় কাব্যগ্রন্থ – ” পিতার রাজ্যে আমি মোকছেদ “


হয়লা গান খুব ভালবাসি – প্রিয়তম্ উজ্জ্বল “প্রেম দে হারামজাদী” খ্যাত লেখক প্রিয়তম্ উজ্জ্বলের ৩য় কাব্যগ্রন্থ ” পিতার রাজ্যে আমি মোকছেদ ” প্রকাশিত হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ তে। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে কাব্য প্রকাশ। কবির সাথে কথা বলেছেন বরিশাল মুক্তখবর। বরিশাল মুক্তখবর : কেমন আছেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটছে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ তে আমার ৩য় কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বরিশাল মুক্তখবর : কেমন সারা পাচ্ছেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : ভালই সারা পাচ্ছি। সত্যি কথা বলতে ডিজিটাল যুগে এসেও মানুষ বই পড়তে ভুলে যায় নি। বরিশাল মুক্তখবর : ২০০৮ সালে ১ম কাব্যগ্রন্থ “কোকিল”, ২০১২ সালে ২য় কাব্যগ্রন্থ “বনশ্রী” ও ২০১৮ সালে ৩য় পিতার রাজ্যে আমি মোকছেদ। এত বিরতি দিয়ে বই প্রকাশিত হচ্ছে কেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : সত্যি কথা বলতে আমি প্রচারবিমূূখ মানুষ। নিজের জন্য লিখি। লিখেই জমা করে রাখি। প্রকাশ করা হয়ে ওঠে না। আমার কবিতা, গল্পগুলো কখনও আপনি একটা নির্দিষ্ট জায়গায় পাবেন না। যা হাতের কাছের পাই তাতেই লিখি। বরিশাল মুক্তখবর : যদি প্রকাশ করতেই না চান তবে তিনটি বই প্রকাশিত হল কিভাবে? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : (হেসে) আমার প্রতিটি বই প্রকাশের পিছনে মজার মজার ঘটনা আছে। লেখালেখি নিয়ে আমার পরিবার সবসময় সহযোগিতা করেছে। ২০০৮ সালে দাদা (অজিত সজল) বলল- একটা বই বের করে ফেল। আমি চিন্তা করে দেখলাম ব্যপারটা মন্দ নয়। পুটলি থেকে কবিতা বের করলাম। দাদা তো হেসে কুটিকুটি। কারন ছোট ছোট কাগজে কবিতা লেখা তারমধ্যে পোষ্টারের বিপরীত পিঠও রয়েছে। সেঁজুতি সাহিত্য পরিষদ বইটি সম্পাদনা করে। তখন আমি অর্থনীতিতে সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, বরিশাল ভর্তি হয়েছি। এরপর দীর্ঘ ৪ বছর পর ২০১২ সালে ২য় কাব্য বনশ্রী। এই বইটি প্রকাশ হবার পিছনে বন্ধু শফিউল বাসার আকন ও সোহান আল মামুন এর অবদান বেশি। ওদের অনুপ্রেরনা না পেলে বইটি প্রকাশিতই হত না। বরিশাল মুক্তখবর : বনশ্রী প্রকাশিত হবার পর নাকি আপনাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : বনশ্রী প্রকাশিত হয় ১২.১২.২০১২ তে। শফিউল বলল- এবার বইটির মোড়ক উম্মোচন করব ম্যাজিক ডে এর দিন। বন্ধুরা মিলে ১২.১২.২০১২ তারিখ কলেজ লাইব্রেরীতে ম্যাজিক ডে পালন করি। ওই দিনই বনশ্রী এর মোড়ক উম্মোচন হয়। অনুষ্ঠানের অতিথি ছিল আমার ক্যাম্পাসের পরিচিত বন্ধুরা। পরিবারের বাইরে আমার আরেকটা পরিবার হল বন্ধুমহল। বরিশাল মুক্তখবর : আপনার লেখা “প্রেম দে হারামজাদী” কবিতাটি তো বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল এবং সেই সাথে তিরস্কারও পেয়েছিলেন। প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : (উচ্চস্বরে হেসে) জনপ্রিয়………! শ্রদ্ধেয় কবি রফিক আজাদ এর বিখ্যাত কবিতা ‘ভাত দে হারামজাদা’ এর ছায়া অবলম্বনে আমার কবিতাটি লেখা। বন্ধুদের পরামর্শে বরিশালে পোষ্টারিং হয়েছিল বইটি তাই সারা পেয়েছিল। বন্ধুবর শফিউল ও মামুনের অবদান ৯৯%। বরিশাল মুক্তখবর : বইটির জন্য নাকি সাংস্কৃতিক সংগঠন উত্তরণ থেকে বহিস্কার ও বরিশালের আঞ্চলিক পত্রিকা তো আপনাকে ধুয়ে দিয়েছিল প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : বরিশালের আঞ্চলিক পত্রিকায় তখন আমার একটা ক্লাশমেট কাজ করত। সে কেন আমার বই না পড়ে অমন লিখল আমি আজও জানি না এবং জানার ইচ্ছাও নেই। ( নিঃশ্বাস ছেড়ে )উত্তরণ এর সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। বরিশাল মুক্তখবর : ২০১৩ সালে ‘প্রেম দে হারামজাদী’ ছিল বরিশাল ক্যাম্পাসের টপ অব দ্যা টক এটা তো স্বীকার করবেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : ২০১৩ সালের জানুযারী মাসের ঘটনা বলি। আমি বিএম কলেজের মসজিদ গেট দিয়ে কলেজে ঢুকছি। কিছু রোমিও ছেলে দুটো মেয়ের পিছু নিয়েছে। কলেজ লাইব্রেরী পর্যন্ত আসতেই ছেলেদের মধ্যে একজন বলে উঠল প্রেম দে হারামজাদী। মেয়ে দুটি রাগে দাতে দাত চেপে পিছনের দিকে তাকাল। ছেলেগুলো একটু চমকে উঠল। পরক্ষনেই উচ্চস্বরে বলল- বাববা আমাদের কি দোষ? এতো প্রিয়তম্ উজ্জ্বল বলেছে। সে কথা মনে হলে আজও হাসি পায়। বনশ্রী বের হবার পর অনেক ঝড় গেছে। বন্ধুদের তিরস্কার সেটা না হয় বাদই দিলাম। আমার ডিপার্টমেন্টের তৎকালিন বিভাগীয় প্রধান ডেকে নিয়ে ইচ্ছামত বকেছে। কেঁদে বের হয়েছি অফিস থেকে। শত অনুরোধ করেও স্যারকে কবিতাটি পড়াতে পারিনি। স্যার কবিতাটি না পড়েই বকেছে। কে বা কারা তৎকালিন অধ্যক্ষ ড. ননী গোপাল দাস স্যারের কাছে অভিযোগ করেছে তাতো আমি জানতাম না। স্যার যখন লোক মারফত আমাকে ডাকল মনে মনে ভাবলাম পড়ালেখা বুঝি গেল। ভীরু ভীরু পায়ে স্যারের সামনে গেলাম। স্যার আমাকে আগ থেকেই চিনতো। আমাকে দেখেই বলল – উজ্জ্বল কি শুনছি এসব? তুমি নাকি মেয়েদের অপমান করে কবিতার বই বের করেছ? আমি কাচুমাচু করে স্যারের হাতে কবিতাটা বের করে দিলাম। স্যার কবিতাটি পড়ে চেয়ার থেকে উঠে আমার কাছে এসে বুকে টেনে নিয়ে বলল- তুমি অনেক ভাল লিখ। আর্শিবাদ করি বড় হও। কোন ব্যক্তি কিংবা সংগঠন তোমাকে নিয়ে সমালোচনা করছে তারা কবিতাটি পড়েনি। বরিশাল মুক্তখবর : কবিতার মূল বিষয়বস্তুটি কি ছিল? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : কবিতার নাম শুনলেই মনে হবে আমি নারীদের ভৎসনা করেছি। আসলে তেমন নয় আমি বকা দিয়েছি সেই সব মেয়েদের যারা প্রেমের নামে নষ্টামি করে। তাদেরকে একফোটা সত্যিকারের প্রেম দিতে বলেছি মাত্র। বরিশাল মুক্তখবর : বর্তমানে পরিচিতজনরা আপনাকে মোকছেদ বলে এতে আপনার অনুভূতি কি? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : কেউ যখন মোকছেদ বলে আমি খুবই খুশি হই। আসলে পিতার রাজ্যে আমি সত্যিই মোকছেদ। বরিশাল মুক্তখবর : আপনার বই কিংবা কবিতার নামগুলো কেমন জানি অদ্ভুদ টাইপের। প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : আমার প্রতিটি লেখায় একটা বার্তা থাকে। চেষ্টা করি সেই বার্তাটা যেন নামে চলে আসে। বরিশাল মুক্তখবর : তবে কি “পিতার রাজ্যে আমি মোকছেদ” বার্তা বহন করে? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : অবশ্যই। (বইটা দেখিয়ে) প্রচ্ছদটা দেখুন। একটা সাপ বঙ্গোপসাগর থেকে উঠে এসে প্রিয় মানচিত্রটাকে আকড়ে ধরেছে। একটি হাত সাপের গলা চেপে ধরেছে। বরিশাল মুক্তখবর : প্রচ্ছদটা এমন কেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : ইতিহাস আমাদের সাক্ষ্য দেয় যারাই বাংলাদেশে আসছে ব্যবসার নামে তারা সবাই বঙ্গোপসাগর দিয়ে আসছে। তারা আমাদের জন্য কখনওই মঙ্গলজনক হয়নি। তাদেরকে সাপের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আর ঐ হাত হল একজন সচেতন দেশপ্রেমিকের প্রতিনিধি। যারা সোনার বাংলা গড়তে চায় ঐসব অশুভ শক্তিকে ধ্বংশ করে। কিন্তু আমরা তাদের মোকছেদ (বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় অর্থ বলদ) বলি। বরিশাল মুক্তখবর : সারা মানচিত্র জুড়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি। বিষয়টা যদি একটু ক্লিয়ার করতেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। তিনি বাঙালী জাতির পিতা। বাংলাদেশ পিতার রাজ্য। কিছু দুষ্ট লোক আছে যারা তাকে বাঙালি জাতির পিতা স্বীকার করে না। আসলে ওদের শরীরে পাকিস্তানি বীজ। আমি বাংলাদেশকে পিতার রাজ্যই মনে করি। বরিশাল মুক্তখবর : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে আপনার বই ‘পিতার রাজ্যে আমি মোকছেদ’ নিয়ে আলোচনা – সমালোচনা হয়েছে। এটা আপনি কিভাবে দেখছেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : আমার প্রতিটি বই নিয়া আলোচনা সমালোচনা হবে। কারন আমি গতানুগতিক ধারায় চলি না। বরিশাল মুক্তখবর : আবার কবে বই পাচ্ছি? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : তা তো জানি না। এবারই বই প্রকাশের কথা ছিল না। কিন্তু আমার বন্ধু নূসরাত জাহান সাথীর জন্যই বইটি প্রকাশিত হল। ও আমার লেখার কঠোর সমালোচক। একদিন ফোন দিয়ে বলল- বইমেলায় একটা বই বের কর। যা লাগবে আমি বুঝব।পান্ডুলিপি রেডি কর। অন্যদিকে আরেক বন্ধু মারিয়া জাহান সালমা সেও বলল- ভয় নেই আমরা আছি তো। সেই সাথে দাদা, বৌদি,বাবা তো আছেই। সবার সহযোগিতারই ফসল স্বরূপ ৩য় গ্রন্থ। বরিশাল মুক্তখবর : বন্ধুরা কি আপনার ২য় পরিবার? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : আমার জীবনে সেভেন স্টার রয়েছে। যেকোন কাজই হোক না কেন তাদের সাহায্য আমার লাগবেই। সোহান আল মামুন, শফিউল বাসার আকন, মারিয়া জাহান সালমা, নূসরাত জাহান সাথী, নজরুল ইসলাম আনিচ, শফিকুল ইসলাম শফিক, আল আমিন শরিফ – ওরা আমার জীবনের এক একটা তাঁরা। ওদের আকাশে আমি তাঁরা কিনা আজও জানা হয়নি। বরিশাল মুক্তখবর : অবসরে কি করেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : অবসরে কি করব তা নিয়া ভাবি (হাসি) তবে গান শুনতে খুব পছন্দ করি তবে সেটা খালি কণ্ঠে। বরিশাল মুক্তখবর : প্রিয় কণ্ঠশিল্পী কে? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : এমন করে বলতে পারব না। যে বাংলা গান গায় সেই আমার প্রিয়। আমি বাংলা গান ছাড়া অন্য গান সহজে শুনি না। বাংলা ভাষার যে কোন গান (হয়লা- পটুয়াখালীর আঞ্চলিক বিয়ের গান) খুব ভালবাসি। সেরাকণ্ঠ সিজন সিক্ম এর সেমিফাইনালিষ্ট মঞ্জুরীর গানের অন্ধ ভক্ত আমি। প্রায়ই মনে হয় শ্রদ্ধেয় শিল্পী ফরিদা পারভীন যদি ‘নিন্দার কাঁটা’ না গাইতেন তবে ওর জন্য ওটাই ছিল যথেষ্ট। আমি যতবার শুনি ততবারই মুগ্ধ হয়ে যাই। এছাড়াও দুজন শিল্পীর গান আমি মন্ত্র মুগ্ধের মত শুনি। মৌতিথি নন্দী ও নিবেদিতা মন্ডল। বরিশাল থাকাবস্থায় আমার জানা মতে তাদের কোন প্রোগ্রামে আমি অনুপস্থিত হইনি। প্রিয় শিল্পী বলতে মঞ্জুরী, মৌতিথি ও নিবেদিতা। বরিশাল মুক্তখবর : প্রিয় লেখক? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : আমার অগ্রজ ভাই অজিত সজল। দারুন গল্প লিখে, কবিতার থীমগুলোও অসাধারন। বরিশাল মুক্তখবর : কি খেতে পছন্দ করেন? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : মায়ের হাতের রান্না। কিন্তু সেটা আর কোনদিনই খাওয়া সম্ভব নয়। কারন ২০১০ সালের ৪ অক্টোবর মা আমাদের ছেড়ে চলে যান। তাই এখন আমার প্রিয় কোন খাবার নেই। বরিশাল মুক্তখবর : জীবনে এমন কোন কথা আছে যা মনে পড়লে চুপ হয়ে যান? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : (ম্লান মুখে) এমন কথার অভাব নেই ভাই। তবে এই মুহূর্তে দুটি কথা মনে পড়ছে ১. আমি কারও জন্য আর্শিবাদ নই ২. বন্ধু উপরে উঠে গেলে তার সাথে সম্পর্ক রাখতে নেই। এগুলো আমার প্রিয় মানুষদের উক্তি যা মনে পড়লেই স্তব্ধ হয়ে যাই। বরিশাল মুক্তখবর : ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। সেভেনস্টার কে নিয়া বাংলাদেশের অাইডল হতে চাই। বরিশাল মুক্তখবর : ভাল থাকবেন। আপনার স্বপ্ন পুরন হোক। আমাদের এতক্ষন সময় দেবার জন্য ধন্যবাদ প্রিয়তম্ উজ্জ্বল : বরিশাল মুক্তখবরকেও ধন্যবাদ।

 




Archives
Image
ডেঙ্গুতে আরও ৫ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৮১
Image
‘ক্রসফায়ারের নামে’ ছাত্রদল নেতাকে হত্যা: শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাইসহ আসামি অর্ধশত
Image
বরিশালে রাস্তার উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
Image
পটুয়াখালীতে ধরা পড়েছে ২ কেজি ২৮০ গ্রাম ওজনের এক ইলিশ
Image
কর্মবিরতিতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের নার্সরা