|
আমার ছাত্ররা আজ দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত, তাদের জন্য আমি গর্বিত
অবসরের ১০ বছর পর সংবাদ সম্মেলনে কাঁদলেন বরিশাল জিলা স্কুল শিক্ষক সুরুজ্জামান
মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক। দীর্ঘ ৩৪ বছর বরিশাল জিলা স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন শিক্ষক মোঃ সুরুজ্জামান । ২০০৮ সালে শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসরে গিয়েও আজও ভুলতে পারেনি তার শিক্ষার্থীদের কথা। তার কাছে শিক্ষা নেয়া অনেক শিক্ষার্থীই আজ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র, পুলিশ অফিসার, সেনা ও নৌ অফিসারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনীতিক নেতা বিভিন্ন পেশায় উচ্চস্থানে কর্মরত রয়েছেন। সকল শিক্ষার্থীদের আজও মঙ্গল কামনা করতে গিয়ে অশ্রু জ্বলে দু’চোখ ভিজিয়ে ফেলেন তিনি। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবসরে গেলেও শিক্ষার্থীদের কথা মনে করে সকলের নিকট থেকে দোয়া ও বিদায় নিতে গনমাধ্যমের শরনাপন্ন হয়েছেন তিনি। শুক্রবার বিকালে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি তার ছাত্র এবং অভিভাবকদের কাছ তাদের মঙ্গল কামনার মাধ্যমে বিদায় ও দোয়া প্রার্থনা করেন। এসময় তিনি আরো বলেন, যত দিন বেঁচে থাকবো, ততদিন আমার সকল শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও সুভান্যুধায়ীদের নিকট দোয়া চেয়ে বলেন, আমি ১৯৭০ সালের ৫ই জানুয়ারি বরিশাল সরকারি জিলা স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। তখন থেকে এই স্কুলের ও শহরের নানা ঘাত প্রতিঘাত দেখেছি। ৩৪ বছর ৬ মাস শিক্ষকতা পর ২০০৪ সালে এই স্কুল থেকে বদলি হয়ে নারায়নগঞ্জের আইইউটি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করি। সেখান থেকে ২০০৮ সালের মে মাসে অবসর গ্রহন করেছি। কিন্তু বরিশাল থেকে বিদায়ের বেলায় কারোর কাছ থেকে বিদায় নিতে পারিনি। কিন্তু পরবর্তীতে বরিশালে আসা পড়লেও কারোর সাথে দেখাও করতে পারিনি। তিনি বলেন, আমি আমার এই দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে হয়তো তেমন আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন করতে পারিনি। কিন্তু পেয়েছি অগনিত ছাত্রের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। আমি আমার এই দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে হয়তো জেনে-না জেনে কোনো ছাত্র বা অভিভাবকের মনে কষ্ট দিয়েছি। সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমার ছাত্ররা আজ দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত, তাদের জন্য আমি গর্বিত। এটাই আমার একজন শিক্ষক হিসেবে পরম পাওয়া। আমার এই শেষ জীবনে চাওয়া পাওয়ার কিছুই নাই। আমার চাওয়া এখন একটাই মৃত্যুর পূর্বে পর্যন্ত বাকী জীবনটা যেন সুস্থ ও সুন্দরভাবে কাটাতে পারি। এজন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি। প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন কালে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন, তারই ছাত্র জিলা স্কুলের তৎকালিন ছাত্র ও বর্তমানে চিকিৎসক ডাঃ মোঃ আল-আমিনসহ অন্যান্য প্রাক্তন ছাত্ররা।
সুব্রত বিশ্বাস
Post Views:
১,৯০৪
|
|