|
এর আগে শুক্রবার আসামি মিজানুর রহমানের বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব
সাভারে দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলা হত্যার প্রধান আসামি মিজান গ্রেপ্তার
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : সাভারে দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলা রায় (১৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি কিশোর গ্যাং সদস্য মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাভারের হেমায়েতপুর থেকে মিজানকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নির্মল কুমার দাস গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে মিজানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে শুক্রবার মিজানুর রহমানের (২০) বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
তারা দু’জনই এজাহারভুক্ত আসামি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। ২০ সেপ্টেম্বর রাতে নীলা রায়কে তুলে নিয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মিজান। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা নারায়ণ রায় মিজানুর রহমান, তার বাবা আবদুর রহমান ও মা নাজমুন নাহার সিদ্দিকাসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। নীলা হত্যা মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান সাভারের ব্যবসায়ী আবদুর রহমানের ছেলে। স্থানীয় একটি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সে। এর আগে একবার টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি মিজান। উল্লেখ্য, ঘটনার দিন নীলা ও তার ভাই অলক রিকশায় করে ফার্মেসিতে যাচ্ছিল ওষুধ আনতে। গার্লাস স্কুলের পাশে রাস্তায় অলককে দূরে সরিয়ে চাপাতি, ছুরি দিয়ে আঘাত করে নীলাকে মারাত্মক জখম করে মিজানুর। পরে স্থানীয়রা এনাম মেডিকেলে নিয়ে গেলে নীলা মারা যায়। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, নীলাকে বিভিন্ন সময়ে ‘উত্ত্যক্ত করত’ মিজানুর। নীলার পরিবার মিজানুরের বাবা-মায়ের কাছে অভিযোগ জানালে তারা ছেলেকে বাধা না দিয়ে ‘উল্টো এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য নীলার বাবা-মাকে হুমকি’ দিত। মিজানুর তার বাবা-মায়ের ইন্ধনে ও প্ররোচনায় নীলাকে হত্যা করে। ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। অন্যদিকে রিমান্ডের বিরোধিতা করে দুই আসামির পক্ষে শুনানি করেন আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ নেতা ও ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন ও মাসুদ আহমেদ। শুনানি শেষে বিচারক দুই দিনের হেফাজতে নিয়ে মিজানুরের বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে নীলা রায় ও তাঁর ভাই অলক রায়ের পথরোধ করেন বখাটে মিজানুর রহমান। পরে তার ভাইয়ের কাছ থেকে নীলাকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে কাছের পরিত্যক্ত বাড়ির একটি কক্ষে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে রাতে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নীলাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নীলার বাবা নারায়ণ রায় গত ২১ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান, তার বাবা আব্দুর রহমান ও মা নাজমুন নাহার সিদ্দিকাসহ অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মানিকগঞ্জ জেলার বালিরটেক এলাকার নারায়ণ রায়ের মেয়ে নীলা সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির অ্যাসেড স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। পৌর এলাকার কাজী মোকমা পাড়ার এক বাড়িতে তাঁর পরিবার ভাড়া থাকে। নীলা খুন হওয়ার পর তাঁর বাবা মিজানু ও তাঁর বাবা-মাকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই তারা পলাতক ছিলেন। বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জ জেলার চারীগ্রাম এলাকা থেকে আব্দুর রহমান (৬০) ও মা নাজমুন্নাহার সিদ্দিকাকে (৫০) গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাদের সাভার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। এদিকে বখাটের ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও প্রধান আসামি মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার বেলা ১১টার দিকে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে সাভার নাগরিক কমিটিসহ ২৬টি সংগঠন সম্মিলিতভাবে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেয়।
Post Views:
২১৮
|
|