Current Bangladesh Time
শনিবার এপ্রিল ২০, ২০২৪ ১:১২ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশাল রাজনীতিতে মামা খেতাব নিয়ে টুটুল স্বাচ্ছন্দে 
Saturday January 4, 2020 , 6:59 pm
Print this E-mail this

বরিশাল রাজনীতিতে মামা খেতাব নিয়ে টুটুল স্বাচ্ছন্দে


শাকিব বিপ্লব ও হাসিবুল ইসলাম : চিপচিপে গড়নের শারীরিক অববয় নিরব হোসেন টুটুল নামটি অনেকের কাছেই ছিল অজানা। নব্বই দশক পরবর্তীতে কথা। বরিশাল নগরীর নাজিরপোল কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে হঠাৎ আবির্ভাব টুটুলকে সর্বপ্রথম রাজনৈতিক শ্লোগান দিতে দেখা যায়। পেশাগত কারণে পোর্টরোডে মৎস্য ব্যবসায় নিয়োজিত থাকায় রাজনীতি নিয়ে তাঁর অতটা মাতামাতি ছিল না। কিন্তু মৎস্য বাণিজ্যিক নীতি ও আদর্শগত দ্বন্দ্বে কবির খানের সাথে টুটুলের মতবিরোধ তুঙ্গে উঠলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা তার অনুকুলে সমর্থন দেওয়ায় অনেকটা নেতার আদলে উত্থ্যান ঘটে। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের আমলে টুটুলকে হঠাতে ও দমাতে নানামুখী নির্যাতনের পরও অবিচল থাকায় একর্যায়ে নেতৃত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন। এরপরই নজরে পড়েন তৎসময়ের কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র। সার্বক্ষণিক সঙ্গী এবং পরামর্শক হিসেবে অল্পদিনেই আস্থা অর্জন করায় টুটুলের পরিচিতির বৃত্ত দীর্ঘায়িত হতে শুরু করে। এর পর বরিশাল রাজনীতিতে সাচ্ছা নেতা হিসেবে টুটুলের প্রভাব ও জনপ্রিয়তা অনেকটা রুপকথার ন্যায় যেন অনাবধ্য এক ইতিহাস। জনশ্রুতি রয়েছে, সাগর সৈকত কুয়াকাটায় সাদিক আব্দুল্লাহ’র সফর সঙ্গী হলে রাতে আকস্মিক এক দুর্ঘটনায় তার ডান পা জখম হয়। গুরুতর হওয়ায় একপর্যায়ে তার পা শরীর থেকে বিচ্ছন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। ২০১৫ সালের ৩০ জানুয়ারি ওই দুর্ঘটনার পর সুস্থ টুটুল হয়ে ওঠেন বরিশাল আওয়ামী লীগের রাজনীতির একটি অঙ্গ। বিশেষ করে সাদিক আব্দুল্লাহ’র সহানুভুতি টুটুলকে ব্যবসা থেকে রাজনীতির দিকে আকস্মিত করে বলে শোনা যায়। এর পরে টুটুলকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বরং মামা উপাধি নিয়ে যুব বয়সী টুটুল মহানগর আ’লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। এই পদে অধিষ্টিত হওয়ার পর যেন অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হন তিনি। তৎসময়ে সদর আসনের সাংসদ জেবুন্নেছা আফরোজের সাথে সাদিক আব্দুল্লাহ’র প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে টুটুলকে অগ্রণী ভুমিকা রাখতে দেখা যায়। সেই সাথে টুটুলের পরিচিতি ধীরে ধীরে শহর ছাপিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলায়ও পৌঁছে যায়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বরং নেতা হিসেবে সাদিক আব্দুল্লাহ’র দিক-নির্দেশনা ও সাংগঠনিক কর্মসূচি সফলে এই যুবক হয়ে প্রাণভোমরা। আ’লীগের মধ্যে কথা চালু রয়েছে যে, টুটুল বিহীন কোন অনুষ্ঠান আয়োজন সুচারুভাবে সম্পন্ন যেন দুরুহ। এমন উক্তি খোদ সাদিক আব্দুল্লাহ’র কণ্ঠেও শোনা গেছে। রাজনীতিতে এই তরুণের উথ্যানের সাথে ‘ভাই টুটুল’ ঘটনাচক্রে ‘মামা টুটুল’ পরিণত হলে তাকে নিয়ে ইর্ষা তৈরি হয়। আ’লীগের অনেকেই তার প্রভাব ও দুরদর্শীতাকে সহজভাবে মেনে নিতে পারছিল না। কেউ কেউ চেয়েছিল অন্তত সাদিক আব্দুল্লাহ’র চার পাশে টুটুলের ছায়া যেন না পড়ে। এনিয়ে ঘরোয়া ষড়যন্ত্র কম হয়নি।লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, অতিউৎসাহী অনেকেই মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ’র পাশে থেকে ছবি তুলে নিজেকে জাহির করতে দেখা যায়। আবার কেউ বিলবোর্ড টাঙিয়ে নজর কাড়েন। কিন্তু টুটুল এক্ষেত্রে যেন ব্যতিক্রম। প্রচারবিমুখ টুটুলকে বিভিন্ন মিছিলে অগ্রভাগে দেখালেও মিডিয়ায় তার প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক সুত্রগুলো বলছে, শুধু দুর্ঘটনার সহানুভুতি নয়, দুরদর্শীতার ছাপ রাখায় বরিশাল মহানগর আ’লীগের যুবরাজ সাদিক আব্দুল্লাহ তাকে ছোট ভাইয়ের স্নেহে আগলে রাখায় টুটুলের অগ্রযাত্রা আরও তরান্বিত হয়। এখন সময় বদলেছে, পাল্টে গেছে রাজনীতির রুপচিত্র। সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে নামলে টুটুকে মাঠের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হলে নেতৃত্বের কারিশমা প্রমাণিত হয়। মেয়র হিসেবে জয়ী সাদিক আব্দুল্লাহ’র আরও কাছাকাছি চলে আসেন টুটুল। শোনা যায় এখন তিনি সাদিক আব্দুল্লাহ’র দেখভালের দায়িত্বসহ তার সাংগঠনিক সকল কর্মসুচির মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থক সমাবেত করতে কারিগরের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এবং সফলও হয়েছেন। সর্বশেষ সদ্য অনুষ্ঠিত মহানগর আওয়ামী লীগের জমকালো সম্মেলন আয়োজন পরবর্তী সফলে সাদিক আব্দুল্লাহ’র সঙ্গী হিসেবে টুটুলের ভুমিকা আলোচিত হয়। এখন শুধু সাদিক নয়, পিতা সাংসদ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহও তারুণ্যদ্বীপ্ত মানসিকতার টুটুলকে স্নেহের চোখে দেখছেন, দিচ্ছেন ছায়া। যে কারণে জেলা আ’লীগের অনুষ্ঠান পুর্ববর্তী সকল প্রস্তুতির নেপথ্যে টুটুলকে ভুমিকা রাখতে দেখা যায়। উদাহরণস্বরুপ আ’লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে অংশ নিতে বরিশাল থেকে ৫টি লঞ্চযোগে অন্তত ১১ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাওয়া থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত তাদের আপ্যয়নের দায়িত্বে টুটুলের অগ্রণী ভুমিকা প্রশংসিত হয়েছে। কারও কারও অভিমত অধিক ক্ষমতা ও মেয়র পদে আসীন হওয়ার পরে সাদিক আব্দুল্লাহ’র চারপাশে থাকা নেতাকর্মীরা সবাই যে তার অনুগত তা নয়। কেউ ভীড়ছে স্বার্থে, কেউ আসছে ভয়ে। নেতাকে বিতর্কিত করতে কমবেশি ষড়যন্ত্র চললেও সাদিক আব্দুল্লাহ’র দুরদর্শীতা সাথে টুটুলের সতর্কতায় কিছুই যেন ধোপে টিকছে না। এক কথায় শারীরিক প্রতিবন্ধকতা টুটুলকে রুক্ষতে পারেনি বিধায় বরিশাল রাজনীতিতে নাটকীয়ভাবে ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিক উপাধি পেয়েছেন। সেই সাথে মামা হিসেবে পেয়েছেন খ্যাতি।

সূত্র : বরিশাল টাইমস




Archives
Image
প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালককে শোকজ দিল উপজেলা আ. লীগ
Image
বরিশালে নৌ-পুলিশের অভিযান, ২০ জেলে ও ২ নৌযান আটক
Image
বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
Image
অভিমান ভুলে একসঙ্গে পর্দায় ফিরছেন তাহসান-মিথিলা
Image
বোতলজাত সয়াবিনের লিটারে দাম বাড়ল ৪ টাকা