|
শুধু জেলা আ.লীগের কর্ণধার আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্’র সাথে যোগাযোগ রাখছেন তিনি
বরিশাল রাজনীতিতে পদহীন নেত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ বড়ই ক্ষুদ্ধ!
শাকিব বিপ্লব, অতিথি প্রতিবেদক : বরিশাল রাজনীতিতে তালগোল পাঁকিয়ে আলোচনার বাইরে রইলেন সাবেক নগর আ.লীগ নেত্রী ও সদর আসনের সাবেক সাংসদ জেবুন্নেছা আফরোজ হিরন। হারিয়ে ফেলেছেন রাজনৈতিক গতিপথ। হয়েছেন তিনি পদহীন নেত্রী। দলীয় নমিনেশন লাভে দুই দফা ব্যার্থতার পর তৃতীয় ধাপে নগর আ.লীগের নেতৃত্ব বঞ্চিত হয়ে অদৃশ্যে চলে গেলেন, আর ফিরে এলেন না আর রাজনীতির মাঠে। বরিশালে আসা-যাওয়া করলেও তা থাকে অজানা। সাংগঠনিক কর্মসূচিতে দেখা তো নেই, পারিবারিক অথবা সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানেও তার ছায়া পড়ছে না। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দুর্যোগের বরিশালেও পা ফেলেননি এই নেত্রী। মাঠে নেই, দল ও কর্মীদের সাথেও দুরত্ব। তার রাজনৈতিক গতিপথ কোনদিকে প্রবাহিত তা জানতে প্রয়াত আ.লীগ নেতা ও সাবেক সিটি কর্পেরেশনের মেয়র ও সাংসদ শওকত হেসেন হিরনপত্নী জেবুন্নেছা আফরোজ যা ব্যাখ্যা দিলেন তার সার কথা হলো, তিনি নগর আ.লীগেরই নেত্রী। কিন্তু মাঠে নেই এ কথায় ক্ষুদ্ধ হয়ে বললেন, ত্রাণ দিয়ে ফেসবুকে ছবি আপলোড করে নিজেকে উপস্থাপনে রাজনৈতিক ব্যাক্তি তিনি নন। সময়ের মঞ্চে তার পদবীর আসন দেখা যাবে, এমন অপেক্ষার কথাই বলে কিছু রহস্যের ইঙ্গিত দিলেন। উল্লেখ্য, বরিশাল রাজনীতিতে সম্ভাবনাময় নেত্রী হিসেবে জেবুন্নেছা আফরোজকে ভাবা হয়েছিলো। রাজনীতির পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রয়াত শওকত হোসেন হিরনের জীবদ্দশায় রাজনীতির মাঠে সান্নিধ্যে থেকে বেশ কৌশল রপ্ত করেছিলেন। সেই সাথে বিভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে একটি পরিচয়ও তৈরি করেছিলেন। আবার রাজনীতির মঞ্চে তার রাজকীয় অভিষিক্ত হলেও তা ছিলো অনেকটাই অপ্রত্যাশিত। যা কাকতালীয় বললে অত্যুক্ত হবে না। জনশ্রুতি রয়েছে, বরিশালে ক্ষমতাসীন দলীয় রাজনীতির নতুন ধারা সৃষ্টির প্রবর্তক সদর আসনের সাংসদ থাকাকালীন শওকত হোসেন হিরন-এর আকস্মিক মৃত্যুতে তাঁর বিশাল কর্মী-সমর্থকদের হাল ধরতে উৎসাহিত হয়ে নিজেই রাজনীতির মঞ্চে ওঠেন জেবুন্নেছা আফরোজ। শূণ্য সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত সংসদীয় নির্বাচনে বিজয়ী লাভের পর বরিশাল আ’লীগের চালকের আসনে বসেন। বছর দুই বেশ দাপটের সাথে রাজনীতির মাঠ দখলে রেখেছিলেন। পাশ্ববর্তী জেলা ঝালকাঠির সাংসদ ও জাতীয় নেতা এবং তৎকালীন আ’লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর প্রচ্ছন্ন-পরোক্ষ সহায়তায় তার রাজনৈতিক গতিপথ মিশ্রন হয়। দলীয় কর্মসূচি ও প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু থাকতেন প্রধান অতিথি। প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনৈতির এই মারপ্যাঁচে বিতর্কের পাশাপাশি দলীয় দ্বন্দ্ব প্রকোট আঁকার ধারণ করে। তখন কথা উঠে হাসানাতের রাজত্বে আমুর বসবাস (!) ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পর স্থানীয় রাজনৈতিক বোদ্ধাদের ধারণা ছিল, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ আবার স্বরূপে মাঠে ফিরে আসবেন এবং জেবুন্নেছা আফরোজের সাথে সমন্বয়ে বরিশাল আ’লীগ ভিন্ন এক শক্তিতে রূপান্তরিত হবে। এই ধারণার বিরোধী মতালম্বীদের অভিমত ছিল, এমনটি ভাবার অবকাশ নেই, যেখানে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সাথে মৃত্যুপূর্ব হিরনের মতদ্বন্দ জেবুন্নেছা আফরোজ অনুসরন করে তার স্বামীর বিশাল জনপ্রিয়তার উপর ভর করে একাই নিজের রাজত্ব নিয়ন্ত্রণ করবেন। পরবর্তীতে সেই ধারণা বাস্তবে রূপ নেয়ার ক্ষেত্রে হঠাৎ অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় হাসানাতপুত্র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্। যুবলীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা বরিশাল রাজনীতিতে পদার্পন করে নগর আ’লীগের নেতৃত্ব লাভের প্রত্যাশায় জেবুন্নেছার আফরোজের সাথে লড়াইয়ে অবতীর্ন হন। এরপরই পাল্টে যায় বরিশালে ক্ষমতাসীন দলীয় রাজনীতির চিত্রপট, সাথে জেবুন্নেছার গতিপথও। যদিও প্রশাসনিক মহলে হিরনের সমর্থন এবং বিশালকর্মী সমর্থক বাহিনী জেবুন্নেছার চারপাশে থাকায় সাদিক আবদুল্লাহ শক্তির ভারসাম্যে প্রথমে কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন। দলীয় সূত্রগুলো জানায়, এ সময় সাদিক আবদুল্লাহ্ বাবার বুদ্ধির প্রয়োগে নিজের কৌশলী পথ ধরে এগুতে শুরু করেন। মাঠে দুই নেতা-নেত্রীর মহড়ায় বরিশাল রাজনীতিতে উত্তেজনার নতুন আভা ছড়াতে শুরু করে। দলের মধ্যে কথা উঠে, জেবুন্নেচ্ছা আফরোজ বিশাল জনপ্রিয়তার মঞ্চ থেকে নিজেকে আর সামাল দিতে পারেনি। কর্মী-সমর্থকদের সাথে অসৌজন্য বা অসহযোগিতামূলক আচরণে দল বদলের ন্যায় ক্ষুব্ধ হিরন ভক্তরা সাদিক আবদুল্লাহ্’র শিবিরে ভিড়তে শুরু করে। এই যাত্রার মধ্যদিয়ে তৎসময়কার সদর আসনের সাংসদ জেবুনেছা আফরোজের রাজনৈতিক শক্তি খর্ব হতে শুরু হয়। কেউ কেউ বলছে, সুযোগে সদ্যব্যবহারে ভুল করেনি সাদিক আবদুল্লাহ। বয়সে যুবক হলেও নিজের বুদ্ধিমত্তার পাশাপাশি পিতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্’র প্রভাবে গোটা নগরীর ওয়ার্ডসমূহে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করতে সক্ষম হয়। এক পর্যায় নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডই এই নেতার অনুকূলে চলে যায়। হঠাৎ ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর ঘোষণা আসে নগর আ’লীগের পূর্ব কমিটি নয়, নতুন কমিটি। সাদিক আবদুল্লাহ্ নির্ভর এই কমিটিতে জেবুন্নেছা আফরোজের আধিক্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে রাজনীতিতে জেবুন্নেছা প্রথম হোঁচট খেয়ে কিছুটা থমকে যান। ঘটনাচক্রে এ সময় আমির হোসেন আমুর সাথেও তার মতবিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায় আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি হিসেবে মেনে নিয়ে তার আগৈলঝাড়ার সেরালের বাস ভবনে উপস্থিত হলে আমির হোসেন আমুর সাথে সম্পর্কের চুড়ান্ত ভাঙন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দলীয় সূত্র জানায়, জেবুন্নেছা আফরোজ এক রকম অসহায় হয়েই সেরালমুখি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে সাদিক আবদুল্লাহকে সমর্থন দিলে জেবুন্নেছার পিছন থেকে তার অনুসারীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে অনেকেই নিস্ক্রিয়, কেউ সরে পড়ে। অবশ্য কারো কারো দাবি, সাদিক আব্দুল্লাহ্’র চাপের মুখে থাকা কর্মী সমর্থকদের এই নেত্রী সদর সাংসদ হয়েও আগলে রাখতে পারেনি। যার ফলশ্রুতিতে জেবুন্নেছার আলেকান্দার বাসভবনে লোকের ভির কমতে শুরু করে, বাড়তে থাকে সাদিক আবদুল্লাহর কালীবাড়ি সড়কের বাসভবনে নেতাকর্মীদের সমাগম। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে সাদিক আবদুল্লাহ্ দলীয় মনোনয়ন লাভ এবং সহসায় বিজয়ী হলে বরিশাল নগর আ’লীগে সাদিক আবদুল্লাহই একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করায় জেবুন্নেছা আফরোজ অস্তিত্ব সংকটে পরে। দলীয় নেতাকর্মীদের অভিমত, এ সময়কালে জেবুন্নেছা আফরোজের গতিবিধিও বুঝে ওঠা দায় হয়ে দাঁড়ায়। একদিকে সেরালে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্’র সাথে সাক্ষাত, অন্যদিকে ঝালকাঠিতে আমির হোসেন আমুর সাথে সাংগঠনিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এক গোলকধাঁধার সৃষ্টি করেন। স্বল্পসংখ্যক অনুসারীদের নিয়ে পথ চলায় রাজনৈতিক মাঠের সীমানাও সংকুচিত হয়ে পড়ে। এ সময় দলীয় হাই কমান্ড থেকে তার দূরত্ব সৃষ্টির কথাও শোনা যায়। স্থানীয়ভাবে কথা উঠে, রাজনীতির মারপ্যাঁচে জেবুন্নেছাই আটকে পরেছেন। জাতীয় নির্বাচনে পূণরায় দলীয় মনোনয়ন পাওয়া তার জন্য দুরূহ হয়ে পড়বে, এমন আশঙ্কা থেকেই এই নেত্রী দিক হারা হয়ে কুল হারিয়েছেন। গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছিল প্রশাসনিক মহলেও। উল্লেখ্য, প্রথম দিকে সাদিক আবদুল্লাহর সাথে নেতৃত্বের লড়াইয়ে মাঠে অগ্রভাগে থাকতে এই সাংসদকে প্রশাসনিক সহায়তা শক্তি জোগায়। কিন্তু সেই শক্তিও তিনি হারিয়েছেন নিজের কিছু ব্যর্থতায়। এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারীর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনপূর্ব জেবুন্নেছা আফরোজের অস্তিত্বের প্রশ্ন উঠে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে। বাস্তবে ঘটেছিলও তাই। জেবুন্নেছা নয়, জাহিদ ফারুক শামীম সদর আসনের টিকিট পেলে রাজনীতি থেকে একে বারেই ছিটকে পড়েন এক সময়ের জনপ্রিয় নেতা শওকত হোসেন হিরনের প্রতিচ্ছবি ধারণকারী ভাবাপন্ন এই নেত্রী। রাজনীতিতে শেষ বলে কথা নেই। সেই আলোকে এই জেবুন্নেছা আফরোজই এক সময় সাদিক আব্দুল্লাহ্’র পথ আগলে ধরতে দলের মধ্যে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টিতে বিকল্প ঐক্য গড়তে জাহিদ ফারুক শামীমের সাথে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ হতে অগ্রসর হয়েছিলেন। সেই শামীমই তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়ায় সদর আসনের মনোনয়ন নিয়ে। সার্বিক চিত্রে বরিশাল আ’লীগ তিন খন্ডে বিভক্ত হয়ে পরে। জাহিদ ফারুক শামীম সাংসদীয় নির্বাচনে জয়লাভের পর পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্তিতে দলের মধ্যে একটি ছোট্ট বলয় তৈরি করতে সক্ষম হলেও জেবুন্নেছা আফরোজের অংশ সংখ্যালঘু হিসেবে পরিণত হয়। অবিশ্বাস্য বা নাটকীয়ভাবে সাদিক আবদুল্লাহর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়ায় জেবুছেন্না আফরোজের স্থলে জাহিদ ফারুক শামীম। এক দিকে মেয়রের পদটি সাদিক আব্দুল্লাহ্’র হাতে, অন্যদিকে মন্ত্রীত্বের পতাকা শামীম বহন করায় নদীর ত্রিমোহনায় হারিয়ে যাওয়ার ন্যায় জেবুন্নেছা আফরোজ আঁছড়ে পরেন। চারিদিকে গুঞ্জন ওঠে, শেষত্বক সংসদে সংরক্ষিত আসনের মনোনয়ন চেয়ে বরিশাল রাজনীতিতে ফিরতে চেয়েছিলেন। সেখানেও হোঁচট খেয়েছেন আগৈলঝাড়ার কণ্যা কিন্তু ঢাকার রাজপথের আ’লীগের লড়াকু সৈনিক সৈয়দা রুবিনা আক্তার মিরা সংসদের সংরক্ষিত আসনলাভে প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন পাওয়ায়। সর্বশেষে অস্তিত্ব রক্ষায় গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নগর আ’লীগের সম্মেলনে জেবুন্নেছা আফরোজ নতুন করে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অবতীর্ণ হন নেতৃত্ব প্রত্যাশায়। শোনা যায়, এই সময় জেবুন্নেছা আফরোজ ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম উভয়ে ঐক্য গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। উপরন্তু উল্টে প্রচারণা শুরু হয়, জেবুন্নেছা আফরোজ মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদের জন্য সাদিক আব্দুল্লাহ্’র সাথে ঐক্য গড়েছে। এই তথ্যের কিছুটা ইঙ্গিতবহন করেছিল সম্মেলনপূর্ব নগরীতে জেবুন্নেছা আফরোজ ও সাদিক আব্দুল্লাহ্’র বিলবোর্ড দেখা গেলেও প্রতিমন্ত্রী শামীমের কোনো ব্যানার টানানো নিয়ে সংঘাত ও পাল্টাপাল্টি অভিযোগের। দলীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, সম্মেলনপূর্ব জেবুন্নেছাকে একটি টোপ দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছিল রাজনীতির কৌশলী খেলায়, যাতে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সাথে ঐক্য গড়ে কোন নতুন দৃশ্য সম্মেলনের মঞ্চে মঞ্চস্থ করতে না পারে। বাস্তবে সেই প্রতিফলন দেখা যায়। নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পরে জেবুন্নেছা আফরোজ। সাদিক আবদুল্লাহর বিজয়ের বেশে নগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে একটি দাড়ি চিহ্ন একে দেন অপর দুই প্রতিদ্বন্দী নেতা-নেত্রীর সামনে। জাহিদ ফারুক শামীম মন্ত্রীত্ব নিয়ে বরিশালের রাজনীতিতে টিকে থাকলেও জেবুন্নেছা আফরোজ হারিয়ে যান অন্য দিগন্তে অর্থাৎ ঢাকায়। সেই থেকে আর বরিশাল রাজনীতিতে এই নেত্রীর পদচারণা নেই। বিশেষ করে করোনার এই দুর্যোগে তার অনুপস্থিতি নতুন করে তাকে আলোচনার প্রেক্ষাপট তৈরী হয়েছে। বর্তমান নীরবতায় জেবুন্নেছা আফরোজের রাজনীতির গতিপথ কোন দিকে? সেই প্রশ্নে নতুন কোন মঞ্চ খুঁজছেন কি না তা নিয়ে উৎসুক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বরিশাল রাজনীতিতে। এই রহস্য খুঁজতে গিয়ে যে তথ্য উপাত্ত মিলেছে তাতে, এই নেত্রী এখন রাজনীতি অপেক্ষা ব্যাবসার দিকে ঝুঁকেছেন। শিপিং ব্যাবসাসহ বহুমুখী বাণিজ্য নিয়ে ঢাকা টু বরিশাল আসা-যাওয়া অব্যাহত থাকলেও কাউকে আঁচ করতে দেয় না। বেশিরভাগ সময় তিনি বরিশালেই থাকেন, সময় দেন রূপাতলির হাউজিং এলাকায় নিজস্ব একটি বহুতল ভবনে বাণিজ্যিক কার্যালয়ে। অথবা ধান গবেষণা সড়কের শেষ প্রান্তে কীর্তনখোলা নদীর তীরে তার অর্থে নির্মাণাধীন একটি কার্গো জাহাজ দেখাশোনায় ব্যাস্ততায় দিন কাটান। তার এক রাজনৈতিক সহোচরের দাবী, নেত্রীর সাথে দেখা পাওয়াই ভার। গতমাসে তার ভাসুরের মৃত্যুর খবরে বাসায় গিয়ে তার একপলক দেখা মেলে। গত ৯ এপ্রিল প্রয়াত নেতা শওকত হোসন হিরনের মৃত্যুবার্ষিকী ঘরোয়ভাবে পলিত হলেও কাউকে ডাকা হয়নি। তার ঘনিষ্ট একটি সূত্র বলছে, অনেকটা নিজেকে অন্তরালে রাখা এই নেত্রীর এখন লক্ষ্য হচ্ছে নগর আ.লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিজেকে নিয়ে আসা। তবে তিনি সাদিক আব্দুল্লাহ অথবা জাহিদ ফারুক শামীম কোনো পক্ষে নেই অর্থাৎ বিভাজনের রাজনীতিতে খেই হারিয়ে ফেলে একাকী থাকতে চাইছেন। শুধু জেলা আ.লীগের কর্ণধার আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সাথে যোগাযোগ রাখছেন। এই প্রসঙ্গে সেলফোনে সাবেক এই সাংসদের সাথে যোগাযোগ করে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় রাজনীতিতে তার নীরবতার কথা তোলা মাত্রই ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে এই প্রতিবেদককে একহাত নেন। বললেন, করোনার এই মুহুর্তে ফোন করে বিরক্ত করার যৌক্তিকতা আছে কি? তার রাজনীতির ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা মাত্রই তেলেবেগুনে জ্বলে জানিয়ে দিলেন তিনি অন্য কারো অনুসরন-অনুকরন করেন না। অনেক ত্রাণ দিয়েছে কিন্তু জাহির করতে রাজী নয় বিধায় প্রচার করেননি, এমনটি দাবী করে দলীয় নেতাদের ত্রাণ বিতরণের দৃশ্যে তিনি বিশ্বাসী নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপের সুরালয়ে। কোথায়, কাকে, দিয়েছেন ত্রাণ-এমন প্রশ্নের প্রতি উত্তরে বললেন, স্যরি, ফোন রাখি।
সূত্র : বরিশাল বাণী
Post Views:
৩২৬
|
|