|
বরিশালে খালের মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মানে পানি প্রবাহ বন্ধ, ভোগান্তিতে ব্যবসায়ীরা
শামীম আহমেদ : স্রোতের কারণে খালের দু’পাশ ভেঙে যাওয়ার অযুহাতে জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ ভাড়ানি খালের সুন্দরকাঠি বাজারসংলগ্ন স্থানে স্থায়ীভাবে দু’দিক দিয়ে খালের মধ্যে প্রায় একশ’ ফুট জায়গায় বড় বড় গাছের খুঁটি পুঁতে বালুর বস্তা ও কনক্রিট ফেলে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী জহির মোল্লা ও তার সহযোগিরা খালে স্থায়ী বাঁধ নির্মান করায় গত একমাস পর্যন্ত চরম ভোগান্তিতে পরেছেন নলুয়া, ফরিদপুর ও দুধল ইউনিয়নের ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি কলসকাঠী, কালীগঞ্জ, বোয়ালীয়াসহ কয়েকটি হাট ও বাজারে যেতে তারা দীর্ঘদিন থেকে ভাড়ানি খাল ব্যবহার করে আসছিলেন। গত একমাস ধরে খালে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করায় বর্তমানে তাদের প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরত্ব ঘুরে বিকল্প পথে ওইসব বাজারে আসা যাওয়া করছেন। এতে তাদের যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে পাশাপাশি খরচও দ্বিগুন গুনতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারের ক্রেতাদের ওপর। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে কিছু না জানিয়েই স্রোতের কারণে খালের দুই পাশ ভেঙে যাওয়ার খোঁড়া অযুহাত দিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ ভাড়ানি খালের সুন্দরকাঠি বাজারসংলগ্ন স্থানে স্থায়ীভাবে দুইদিক দিয়ে খালের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ওই খালের সুবিধাভোগি ফরিদপুর ইউনিয়নের একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, দীর্ঘদিনের সরকারী এ খালের মধ্যে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি কিভাবে অবৈধভাবে বাঁধ নির্মান করে পুরো খাল বন্ধ করে দিয়েছেন তা আমাদের বোধগ্যম নয়। দুধল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম মোর্শেদ খান উজ্জল জানান, খাল দিয়ে তার ইউনিয়ন পরিষদের মালামাল আনানেয়া করতেও সুবিধা হতো। এখন বিকল্প পথ দিয়ে মালামাল আনতে হয়। তাতে খরচ ও ঝামেলা দুটিই বেড়েছে। সরকারী খালে স্থায়ী বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, খালে বাঁধ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা আইনসম্মত নয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জহির মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ভাঙনের হাত থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষা করতেই এ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকাবাসী না চাইলে বাঁধটি অপসারন করা হবে বলেও তিনি উলেখ করেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রবহমান কোনো খালে বাঁধ বা ভরাট করা যাবে না। গত কয়েকদিন পূর্বে খালে বাঁধ দেয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। তার নির্দেশরা পেলে খালের প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত খালের মধ্যে নির্মিত বাঁধ অপসারন করা হবে। বরিশাল পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, প্রবাহমান কোনো খাল বা নদীতে বাঁধ দেয়ার আইনগত কোনো সুযোগ নেই। আর এ বিষয়টি আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। তাই খুব দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, খালে স্থায়ী বাঁধ দেয়া সম্পূর্ণ বেআইনী। তাই বিষয়টির খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Post Views:
৭২
|
|