|
দুর্বল আইন দিয়ে ধর্ষণের বিচার সম্ভব নয়-কাজী নুসরাত শরমীন
ধর্ষকের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই যতই দাবি উঠুক, ধর্ষণের অপরাধ প্রমাণিত হলে আইনে সরাসরি মৃত্যুদণ্ডের বিধান নেই তো !!! ধর্ষণের মতো অপরাধের অংকটা কত ডিজিটে গিয়ে ঠেকলে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীত নিদ্রা ভাঙবে, সেটাও একটা বেশুমার চিন্তার বিষয়। আইনের সংস্কার জরুরি। আইন কঠোর না হলে যতই আমরা দাবি জানাই, কাজের কাজ কিছু হবে না। এমন বহু আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামিরা জামিনের ক্ষেত্র তৈরি করে দিব্যি পার পেয়ে গেছে…..কেউ কেউ বিদেশে পালিয়েছে। যদিও ধর্ষণ নন বেইলেবল, তবু জামিন পেয়েছে। তাই এই দুর্বল আইন দিয়ে ধর্ষণের বিচার বা এ ধরণের অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ছয়টি জেলায় ৪৩৭২টি ধর্ষণের মামলা হয়েছে, কিন্তু সাজা হয়েছে মাত্র পাঁচ জনের !!!!! তাই মৃত্যুদণ্ডের জন্য এই অরণ্যে রোদন নিজের চাওয়ার প্রতি প্রহসন। মান্ধাতার আমলের এই আইনগুলো শুধু দুর্বলই নয়, নারীর প্রতি অবমাননাকর শব্দেও ভরপুর। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ দিয়ে ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়া এই ধর্ষণের মতো অপরাধ দমন সম্ভব নয়। সবাই কিন্তু আবার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করেন না। এক্ষেত্রেও আমার একটা পর্যবেক্ষণ আছে, আমাদের দেশেও কেউ কেউ মৃত্যুদণ্ডকে শাস্তি হিসেবে অমানবিক মনে করেন। উন্নত দেশগুলোতেও আজকাল মৃত্যুদণ্ডকে উঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমার দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে অপরাধপ্রবণতা উন্নত দেশগুলোর সাথে তুলনার বিচারে ভয়াবহ। এক বছরের ব্যবধানে ধর্ষণের দ্বিগুণ সংখ্যাটা তাই অ্যালার্মিং। শিশু ধর্ষণের বিভৎসতা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এতোটা আছে বলে আমার জানা নেই। তাই ধর্ষণকারীকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে অনুকম্পা দেখানোর সুযোগ নেই আমাদের।
লেখক : কাজী নুসরাত শরমীন, সাংবাদিক
Post Views:
৩২৫
|
|