Current Bangladesh Time
বৃহস্পতিবার মার্চ ২৮, ২০২৪ ৬:১৭ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » চঞ্চল-শাওনের ভাইরাল ‘যুবতী রাধে’ গান নিয়ে বিতর্ক 
Tuesday October 27, 2020 , 10:05 am
Print this E-mail this

এমন প্রচলিত গানের জন্য অনুমতি লাগবে সেটা কেউ ভাবেনি-অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী

চঞ্চল-শাওনের ভাইরাল ‘যুবতী রাধে’ গান নিয়ে বিতর্ক


মুক্তখবর বিনোদন ডেস্ক : ‘আইপিডিসি আমাদের গান’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী পার্থ বড়ুয়ার সংগীতায়োজনে ‘যুবতী রাধে’ গানটি প্রকাশ হয়েছে। এটি গেয়েছেন জনপ্রিয় দুই তারকা মেহের আফরোজ শাওন ও চঞ্চল চৌধুরী। তাদের কণ্ঠে গানটি বেশ সাড়া ফেলেছে। এ গান নিয়ে বেধেছে বিতর্ক। আইপিডিসি গানের পরিচয় দিতে গিয়ে লিখেছে, এ গান সংগৃহীত। সেখানেই বিপত্তি। গানটি মূলত সরলপুর ব্যান্ডের। তাই তারা আইপিডিসির পরিচয় নিয়ে আপত্তি তুলেছে। সেই সঙ্গে অনুমতি ছাড়া কপিরাইট আইন ভঙ্গ করে তাদের গান বাজারজাত করার জন্য প্রতিবাদ করে এটি সরিয়ে নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। গান সরিয়ে ক্ষমা না চাইলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সরলপুর ব্যান্ডের মুখপাত্র এবং লিড গিটারিস্ট মারজিয়া তুরিন। তিনি বলেন, ‘আমরা সরলপুর ব্যান্ড ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশে সংগীত চর্চা করে আসছি। এ পর্যন্ত আমাদের ৫০টির মতো মৌলিক গান তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন কনসার্ট, টেলিভিশন লাইভ শোতে আনরিলিজ ট্র্যাক হিসেবে ১০-১২টি গান ইতোমধ্য  শ্রোতামহলে দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে।’ ‘এর মধ্যে আমাদের লোকজ ধারার মৌলিক গান ‘যুবতী রাধে’ মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, গানটি নিয়ে মানুষের মাঝে নানা ধরনের বিভ্রান্তিও ছড়িয়ে পড়েছে যে এটি ময়মনসিংহ গীতিকা থেকে সংগৃহীত একটি গান। মূলত গানটি আমাদের ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ভোকাল ও গিটারিস্ট তারিকুল ইসলাম তপনের লেখা ও সুর করা গানটি সরলপুর ব্যান্ড শুরু থেকেই পরিবেশন করে আসছে। কিন্তু বিভিন্ন সময় আমাদের গানটি অনেকেই নিজের বলে প্রকাশের চেষ্টা করে এসেছেন। ফলে ২০১৮ সালে আমরা গানটির কপিরাইট সংগ্রহ করি।’

আইপিডিসির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত ২০ অক্টোবর ‘আইপিডিসি আমাদের গান’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী পার্থ বড়ুয়ার সংগীতায়োজনে জনপ্রিয় দুই তারকা মেহের আফরোজ শাওন ও চঞ্চল চৌধুরীর কণ্ঠে গানটি প্রকাশ করা হয়। যাতে আমাদের গানটিকে লোকজ গান হিসেবে সংগৃহীত বলে উল্লেখ করা হয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গানটি ইউটিউব কর্তৃপক্ষ তাদের চ্যানেল থেকে সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড কর্তৃপক্ষ গানটি তাদের ফেসবুক পেজসহ বিভিন্ন পেজ থেকে প্রকাশ করে আমাদের মেধাস্বত্বকে আরও বিপন্ন করে তুলছে। তারা এখান থেকে গানটি সরিয়ে ক্ষমা না চাইলে আমরা আইনের আশ্রয় নেব। এ ব্যাপারে আমরা কপিরাইট কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি।” ‘যুবতী রাধে’ গানটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ গানটি লেখা শুরু করি ২০০৬-২০০৭ সাল থেকে। তখনকার সময়ে আমরা কয়েকজন একদিন রাতব্যাপী পালাগান দেখতে যাই। যেখানে রাধাকৃষ্ণ সম্পর্কিত বিভিন্ন পালাগান হয়েছিল, যা আমাদের খুবই ভালো লাগে এবং মন কাড়ে। তারপর থেকে রাধাকৃষ্ণ’র গানগুলোর ওপর নির্ভর করে আমরা এ গানটি লেখা শুরু করি। রাধাকৃষ্ণের গল্প থেকে আমরা বিভিন্ন তথ্য-ভাবধারা, শব্দচয়ন সংগ্রহ করি। কিন্তু কোনো হুবহু কথা আমরা সংগ্রহ করিনি।’ ‘আমাদের এ গানের সাথে কোথাও কোনো গানের হুবহু মিল নেই। গানের গীতিকার এবং সুরকার তারিকুল ইসলাম তপন। গানটি আমরা সম্পূর্ণরূপে কীর্তন ও লীলা কীর্তনের ওপর নির্ভর করে সুর করেছি। কীর্তন ও লীলাকীর্তনের ভাবধারা গানটিতে আনার চেষ্টা করেছি। ‘যুবতী রাধে’ গানটি আমরা ২০১০ সালে ময়মনসিংহে কনসার্টে পরিবেশন করি। ২০১২ সালে চ্যানেল নাইনে আমরা এ গানটিসহ আরও সাতটি গান আনরিলিজ ট্র্যাক হিসেবে প্রকাশ করি। পরবর্তীতে বিভিন্ন চ্যানেলেই আমরা একইভাবে আমাদের আনরিলিজ ট্র্যাকগুলো আমরা গেয়েছি।’ ‘২০১০ সালে সরলপুর ব্যান্ডের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে। ২০১৮ সালে আমরা সরলপুর ব্যান্ডের রেজিস্ট্রেশন করি। তার সাথে সাথে আমরা ১২টি মৌলিক গানের সনদ নিয়ে থাকি যার মধ্যে একটি ‘যুবতী রাধে’। ২০১৮ সালের জুন মাসে এর কপিরাইট হয়।’ ‘যুবতী রাধে’ গানটি নিয়ে প্রথম বিভ্রান্তি তৈরি করেন সুমী মির্জা নামের এক শিল্পী দাবি করে তুরিন বলেন, “তিনি গানটির কথা পরিবর্তন করে লেজার ভিশনের ব্যানারে তাদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। ইউটিউবের কমেন্টে সে আমাদের গানটিকে পালা গান, মহুয়া গান, গোয়ালিনী গানসহ নানা নামে প্রচার করে। ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা তার সাথে যোগাযোগ করলে সে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। যার প্রেক্ষিতে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হই। পরবর্তীতে কপিরাইট অফিস থেকে আমাদের দুই পক্ষকে ডাকে। সুমী মির্জা গানটিকে ময়মনসিংহ গীতিকার মহুয়া গান কিংবা গোয়ালিনি গান বলে দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে না পারায় দুটি শুনানির মাধ্যমে গানটির সত্যতা প্রকাশ হয় এবং গানটির কপিরাইট আমরা পাই। পরবর্তীতে সে আমাদের ‘যুবতী রাধে’ গানটির সুর ও কথার অংশ হুবহু নকল করে, ‘বিনোদিনী রাই’ নামে আরেকটি গান প্রকাশ করে এবং সাথে সাথে গানটির কপিরাইট নিয়ে নেয়।” ‘এ গানের ব্যাপারে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে যে, ‘বিনোদিনী রাই’ এবং ‘যুবতী রাধে’ গানটি এক। আসলে বিষয়টি তা নয়। সে প্রেক্ষিতে সুমী মির্জার সাথে আমাদের যে দ্বন্দ্ব তা কোর্টে এখনো চলমান। করোনা পরিস্থিতির পাশাপাশি আমরাও দেশের বাইরে অবস্থান করায় মামলার কার্যক্রম থমকে আছে। আমরা দেশে ফিরলেই পুনরায় কোর্টে মামলাটি নিয়ে অগ্রসর হবো এবং কলার টিউনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গানটি প্রকাশ করায় যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন আমরা হয়েছি তার জন্য কোর্টে আবেদন করব।’

সরলপুর ব্যান্ডের বর্তমান লাইনআপ :
মেইন ভোকাল মারজিয়া আমিন তুরিন এবং তারিকুল ইসলাম তপন। লিড গিটারিস্ট- তারিকুল ইসলাম তপন, রিদম গিটারিস্ট সুব্রত উল্লাস, বেজ গিটার তপু, ড্রামস সজীব, কিবোর্ড প্রীতম, দোতারা ও ব্যাঞ্জো শিশির ও খমক তুরিন।

এমন জটিলতার সামনে দাঁড়িয়ে গানটি নিয়ে মুখ খুলেছেন ‘মনপুরা’র সোনাই খ্যাত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘খুব অবাক হয়েছি আমি পুরো ঘটনাটিতে। ‘যুবতী রাধে’ গানটিকে আমরা সবাই প্রচলিত গান বলেই জানতাম। বহু বছর আগের গান এটা। কিছু কথা আর সুর পরিবর্তন হয়েছে। এর কথা, ভাব, সুর সেই প্রমাণ দেয়। তখনকার সাধকেরা রাধাকৃষ্ণের প্রেম নিয়ে পালা-পুঁথি লিখতেন, নানা পদ রচনা করতেন। এমন প্রচলিত গানের জন্য অনুমতি লাগবে সেটা কেউ ভাবেনি। ইউটিউবেও এই গানের অনেকগুলো ভার্সন দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোনো ব্যান্ডের নাম ক্রেডিট হিসেবে দেয়া নেই। যদি জানা যেত গানটির মালিক সরলপুর ব্যান্ড তাহলে আইপিডিসি বা পার্থ বড়ুয়া অবশ্যই তাদের অনুমতি নিতো। আমরা সবাই দীর্ঘদিন ধরেই শিল্পচর্চার সঙ্গে জড়িত। কোনো নেতিবাচক মানসিকতা এখানে কারোর নেই।’ চঞ্চল আরও বলেন, ‘আমি শখের গায়ক। বেশ কিছু গান আমি গেয়েছি। আপনারা জানেন সেগুলোর প্রায় সবই ফোক গান। গানের কথা একটু সেদিক করে নেন অনেকেই অনেক সময়। বকুল ফুল বকুল ফুল গানটি খুব জনপ্রিয় এখন। এটা কিন্তু সর্বপ্রথম আমার কণ্ঠেই রেকর্ড হয়েছে। এরপর জলের গান গেয়েছে, দিনাত জাহান মুন্নী গেয়েছেন। এখন আমি কি বলবো যে এই গান তারা আমার অনুমতি ছাড়া কেন গাইলো? আমি এই গানের মালিক? বা আমি এই গানের কপিরাইট আমার নামে করে নেবো? একদমই না। কারণ গানটি অনেক আগে থেকেই মানুষের মুখে মুখে বেজে চলেছে। আমি সেটাকে রেকর্ড করে সবার কাছে তুলে ধরেছি। তাই বলে এই গান আমার হয়ে গেল না। আমার কণ্ঠে আরেকটি জনপ্রিয় গান আছে ‘ফুল গাছটি লাগাইছিলাম ধুলা মাটি দিয়া রে’। এটি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুরা অঞ্চলের গান। আমি গাওয়ার পর খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই মুখে মুখে বলেন, এটা চঞ্চলের গান। তাই বলে এটা তো আমার হয়ে গেল না। এর পদ রচনাকারী আমি নই। একইভাবে ‘মনপুরা’ সিনেমায় ‘নিথুয়া পাথারে’ গানটির সবগুলো লাইনই ছিলো সংগৃহিত। কিন্তু শেষের অন্তরাটি গিয়াসউদ্দিন সেলিম লিখেছেন। তাই বলে গানটিকে কিন্তু তিনি তার দাবি করেননি। এটা সংগৃহিত গান হিসেবেই পরিচিত।’ ‘কোনো গানে কেউ খানিকটা এদিক সেদিক পরিবর্তন করে যদি সেটা তার নিজের বলে দাবি করে তখন তো আসলে বলার কিছু থাকে না। শুনছি সরলপুর ব্যান্ড দাবি করেছে তাদের নামে কপিরাইট আছে ‘যুবতী রাধে’ গানটি তাদের। যদি এমনটা হয় তাহলে আইন তাদের পক্ষে। সেটা মানতেই হবে। তবে আমার কিছু প্রশ্ন আছে। সরলপুর ব্যান্ড তাদের বক্তব্যে বলছে গানটির ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছেন আর ৭০ ভাগ তাদের লেখা। জানতেই চাই যে ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছেন সেটা কার কার থেকে? তাদের কপিরাইটের বেলায় বিষয়টা কি হবে? আর যে ৭০ ভাগ তারা লিখেছেন সেখানে কোন কোন লাইনগুলো তাদের লেখা? কারণ বেশিরভাগই লাইন মধ্যযুগের কবি দ্বিজ কানাইয়ের লেখা মৈমনসিংহ গীতিকার মহুয়া গানের পদের মতো। প্রায় হুবহু। জানিনা কপিরাইট আইনের ব্যাখ্যা বা নিয়মটা কেমন। সেটাই জানতে চাই তাদের কাছে। কীভাবে গানটি তাদের মালিকানায় এলো। তারপর একটা বিষয় হলো যে গানটি আমি ও শাওন গেয়েছি সেই গানের অনেক গুলো ভার্সন ইউটিউবে রয়েছে। সেগুলোর কপিরাইট কার? সেগুলো তো অনেকদিন ধরেই রয়েছে সেখানে। অনেক ভিউও আছে। তাহলে সেগুলো না সরিয়ে যখন আমরা গাইলাম এবং গানটি খুব সাড়া পেল তখন কেন সরানো হলো?-যোগ করেন ‘আয়নাবাজি’ খ্যাত চঞ্চল।

সূত্র : জাগো নিউজ




Archives
Image
কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি এলাকা থেকে চার কিশোরসহ সাতজন অপহরণ
Image
বরিশালে রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে নবজাতককে উদ্ধার
Image
স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে বরিশালের নদীতে ঘুরছে সুন্দরবনের কুমির
Image
ঈদে যানবাহনে ভাড়া কমানোর দাবিতে বরিশালে বিক্ষোভ
Image
বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজা