|
এবার বরিশালের এক দাখিল মাদ্রাসায় ১ কেজি মুড়ির বিল ১৪ হাজার টাকা!
আল আমিন গাজী : আলোচিত বালিশ ও পর্দার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বরিশালের গৌরনদীতে মুড়ির দাম নিয়ে নতুন বিতর্কের ঘটনা সৃষ্টি করলেন দক্ষিন দিয়াশুর সৈয়দিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল হালিম। তিনি নিজেকে সাধু দাবি করলেও তার বিরুদ্ধে রয়েছে মাদ্রাসার নানা দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ।১ কেজি মুড়ি ও বিস্কুটের বিল ১৪ হাজার ৮শ ৮০ টাকার ভাউচার বানিয়ে বিল উত্তোলন এমন চাঞ্চ্যলকর বিষয়টি আদালত পাড়া পর্যন্ত গড়িয়েছে। গৌরনদী উপজেলার দক্ষিন দিয়াশুর সৈয়দিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ১ কেজি মুড়ি ও বিস্কুটের বিল ১৪ হাজার ৮শ ৮০ টাকা। এঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিবাবক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সমলোচনার ঝড় উঠেছে। ২০১৮ সালের ২৮শে নভেম্বর সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল হালিম খরচ বাবদ মাদ্রাসার হিসাব খাতায় ১ কেজি মুড়ি ও বিস্কুটের বিল লিখেছে ১৪ হাজার ৮শ ৮০ টাকা। এদিকে নিজের ভুল হয়েছে বলে প্রতিবেদকের মুঠোফোনে স্বিকারও করেন। আবদুল হালিম বলেন, খাতায় হয়তো ভুল উঠানো হয়েছে। ভুল হতে পারে। আমার সঠিক মনে নেই। তবে আমি মাদ্রাসার কমিটিকে সাথে নিয়ে বসলে বিষয়টি পরিস্কার হবে। আর ১৪ হাজার ৮শ ৮০টাকা শুধু মুড়ির বিল না হয়তো এর সাথে আরো অন্য কিছুর বিল রয়েছে। এদিকে দিয়াশুর সৈয়দিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল হালিমের বিরুদ্ধে নানা দূর্নীতির অভিযোগ এনে একই মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট আবদুস ছত্তার গত বছরের ১৩ই মে বাদি হয়ে বরিশাল বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌরনদী আমলী আদালতে আবদুল হালিম সহ ৭ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, আবদুল হালিমসহ তার সহযোগীরা সরকারী বই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা না দিয়ে ২০১৭ সালের মে মাসে মোট ৪৪ মণ বই কেজি হিসাবে বিক্রি করে ১৫ হাজার ৩শ ৩০ টাকা। ৩০জন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি বাবদ ৫৬ হাজার ৫শ টাকা আদায় করে। পরে বোর্ড ফি বাবদ সুপারিনটেনডেন্ট ছত্তার মিয়ার কাছে ৩৫ হাজার ৮শ ২৮ টাকা জমা দেয়া হয়। বাকি ২০ হাজার ৬শ ৮২টাকা আবদুল হালিমসহ তার সহযোগীরা আত্মসাৎ করেন। তাছাড়া সাময়িক ও বার্ষিক পরিক্ষার অংশ গ্রহনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের মাসিক বেতন ২০০৪ থেকে ২০১৮ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫ বছরের দাখিল ও জেডিসি পাবলিক পরিক্ষায় রেজিষ্ট্রেশন ফি এবং ভর্তি ফিসহ ও অন্যান্য খাতের আয়ের ২৭ লক্ষ, ৩১ হাজার, ৬শ ১৮টাকা উত্তোলন করেন মামলার বিবাদীরা। তবে এসব বিষয় জানতে চাইলে সুপারিনটেনডেন্ট ছত্তার মিয়াকে লাঞ্চিত সহ নানা হুমকি প্রদান করেন আবদুল হালিমসহ তার সহযোগীরা। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, সুপারিনটেনডেন্ট ছত্তার মিয়ার স্বাক্ষর জাল ও সিল বানিয়ে গত বছরের ১৮ই মার্চ গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর প্রতি স্বাক্ষরের পর বিল ফরমে টাকার অংকে ২ লক্ষ ৯৬ হাজার ২৫টাকার স্থানে ফ্লুড দিয়ে মুছে ২লক্ষ ৮৩ হাজার ৩শ ৮২ টাকা লিপিবদ্ধ করে শিক্ষক কর্মচারীদের ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বেতন ভাতা গত বছরের ২১ শে মার্চ রুপালী ব্যাংক শিকারপুর শাখায় জমা দেয়। অপরদিকে আবদুস ছত্তার বলেন, আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে মাদ্রাসার সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট হালিম ১৩লক্ষ ৭৭হাজার ৬শ ৫০টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপারিনটেনডেন্ট। ১৯৮৬ সাল থেকে আমি দায়িত্ব পালন করে আসছি। কাগজ পত্র দিয়ে এসব প্রমাণ করতে চাই। দূর্নীতি ও জালিয়াতীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় মামলার বাদীকে বিভিন্ন সময় লাঞ্চিত করে ও প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে আসছেন। তা ছাড়া ১ কেজি মুড়ির দাম ১৪ হাজার ৮শ ৮০ টাকা হয় কিভাবে জানতে চাইলে গত ১৪ই ডিসেম্বর সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল হালিমকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু হালিম সেই নোটিশের কোন জবাব দেয়নি। তবে হালিমের এমন কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রাও। তাদের মাঝে এখন একটাই প্রশ্ন? ১ কেজি মুড়ির দাম কিভাবে ১৪ হাজার ৮শ টাকা হয়।
সূত্র
: বরিশাল
ক্রাইম ওয়াচ
Post Views:
৯১
|
|