|
দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যলোকে এসেছেন দোলায় চড়ে, যার ফল হচ্ছে মড়ক, আর দেবী সপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন গজে (হাতি) চড়ে
আজ শুভ বিজয়া দশমী, ‘আসছে বছর আবার হবে’ এ বার্তা দিয়ে মর্ত্য থেকে কৈলাসে ফিরে যাবেন দেবী দুর্গা
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ‘আসছে বছর আবার হবে’ এ বার্তা দিয়ে মর্ত্য থেকে কৈলাসে ফিরে যাবেন দেবী দুর্গা। আজ (সোমবার, ২৬ অক্টোবর) শুভ বিজয়া দশমী। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনের দুর্গোৎসব শেষ হবে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। মর্ত্যলোক ছেড়ে বিদায় নেবেন মা। অশ্রুসজল চোখে বিসর্জন দেবেন দুর্গা প্রতিমাকে। এরই মধ্য দিয়ে ভাঙবে পাঁচ দিনের মিলন মেলা। আজ সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমীবিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন দেওয়া হবে। এরপর সারাদেশে স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে এবার বিজয়া শোভাযাত্রা হচ্ছে না। সব মণ্ডপ ও মন্দিরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিসর্জন শেষে ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করবেন। পুরাণ বলে, ‘দুর্গম’ নামে এক অসুর ছিল। তার কাজ ছিল জীবজগতের জন্য দুর্গতি সৃষ্টি করা। যে দেবী সেই দুর্গম অসুরকে বধ করে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত দেবতাদের হারানো রাজ্য ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং জীবজগৎকে চিরকাল দুর্গতির হাত থেকে রক্ষা করেন, তিনিই দুর্গা। ভারতবর্ষের বাঙালি হিন্দু মানসে দুর্গা প্রতিবাদের দেবী, প্রতিরোধের দেবী। একই সঙ্গে তিনি ‘মাতৃরূপেণ’ ও ‘শক্তিরূপেণ’। এ উৎসব শরৎকালে উদ্যাপিত হয় বলে এটিকে শারদীয় দুর্গোৎসবও বলা হয়। পুরাণ মতে, এ তিথিতে দেবী দুর্গার আশীর্বাদ নিয়ে লঙ্কার রাজা রাবণকে বধ করেছিলেন দশরথ পুত্র শ্রীরামচন্দ্র। এছাড়া ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন রামচন্দ্র। তাই এ মহানবমীতে ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজিত হয়েছেন দেবী দুর্গা। নবমী সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হয়েছে সন্ধিপূজা। মহিষাসুর বধের সময় দেবী দুর্গা প্রচণ্ড ক্রোধে কৃষ্ণবর্ণ রূপ ধারণ করেছিলেন। তাই পূজার এ আচারের সময় দেবীকে চামুণ্ডা রূপে পূজা করা হয়েছে। শাস্ত্রে আছে, নবমী পূজার মাধ্যমে মানবকুলে সম্পদলাভ হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী, শাপলা, শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে রোববার দশভুজা দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নীল অপরাজিতা ফুল নবমী পূজার বিশেষ অনুষঙ্গ। নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আহুতি দেয়া হয়। ১০৮টি বেলপাতা, আম কাঠ ও ঘি দিয়ে এ যজ্ঞ করা হয়। পূজা শেষে যথারীতি অঞ্জলি। সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন দোলায় (পালকি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে মড়ক। আর দেবী সপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন গজে (হাতি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা।
Post Views:
২৯১
|
|