Current Bangladesh Time
বৃহস্পতিবার এপ্রিল ২৫, ২০২৪ ৬:২৮ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » অব্যবহৃত জিনিস ঘরের অলঙ্কার 
Wednesday January 15, 2020 , 8:00 pm
Print this E-mail this

অব্যবহৃত জিনিস ঘরের অলঙ্কার


তাপস দে আকাশ, পটিয়া : আমাদের ঘরে অব্যবহৃত অনেক জিনিস পড়ে থাকে অনাদরে। সেই সব জিনিস জমে জমে জঞ্জালের স্তুপ তৈরি করে। এক সময় ফেলেই দেওয়া হয় সেসব। অথচ ভাবুন তো অবব্যহৃত জিনিস যদি হাতের ছোঁয়ায় হয়ে যায় ঘরের অলঙ্কার তখন মনটা কেমন হয় বলুন তো। তবে চলুন জেনে নেয় তার পরিচয় ও কেমন করে ফেলে দেয়া জিনিসপাতি হয়ে উঠতে পারে ঘরের অলঙ্কার। বর্তমানে কর্মস্থল থেকে শুরুকরে সামাজিক পর্যায়েও পুরুষের পাশে নারীদের অবস্থান এখন বেশ শক্ত। নারীরা এখন আর ঘরে বসে নেই। পড়াশুনা করে তারা স্বনির্ভর হচ্ছেন নিজ প্রচেষ্টায়। অনেক বাঁধাবিপত্তি থাকা সত্ত্বেও তারা থেমে নেই। স্বপ্ন দেখছেন নতুন কিছু করার। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, দেশের জন্য অবদান রাখার। নিচ্ছেন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ। নিজেকে গড়ে তুলছেন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। এমনই একজনের নাম শাহনাজ বেগম।

পটিয়া পৌর সদরের পাইকপাড়া এলাকার গৃহবধূ। জন্মগতভাবে চট্টগ্রাম শহরের চাকতাই এলাকায় বেড়ে উঠলেও গত ২০০০ সালে পটিয়া পৌর সদরের সাবেক পটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজু মিয়া সওদাগরে ছোট পুত্র কাঠ ব্যবসায়ী অহিদুল আলম চৌধুরী প্রকাশ বাছেক কোম্পানির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর সংসার শুরু হয় পটিয়ায়। সংসার কেন্দ্রিক এখন পটিয়াতে বসবাস করতে হচ্ছে শাহনাজকে। সংসার পাশাপাশি শাহনাজ এলাকায় নারীদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার, এলাকার সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে যুক্ত থেকে অসহায় গরীব মেহনতী মানুষের কল্যাণেও কাজ করে যাচ্ছে। এত ব্যস্থতার মাঝেও শাহনাজ অবসর সময়ে সংসারের ছেড়া ও অবব্যহৃত জিনিসপত্র দিয়ে নিজ হাতে তৈরি করে যাচ্ছেন ঘর সাজানোর বিভিন্ন সামগ্রী। যা আসলেই দেখার মতো। তিনি তৈরি করে যাচ্ছেন, ওয়াটার ফলস, ওয়াল ম্যাট, ওয়াল হেঙ্গিং, ঝাড়বাতি, মাছের পিঠের মতো ঝাড়বাতি, জুয়েলারি স্ট্যান্ড, ফুলেল ল্যাম্প, কার্টুন টব, পাতার ঝোলানো ল্যাম্প, ফুলদানী। বাবা চট্টগ্রাম শহরের চাকতাই ছোবহান সওদাগর সড়কের হাজী নবী হোসেন সওদাগর ও মা মরিয়ম বেগমের সাত সন্তানের মধ্যে সবার ছোট মেয়ে শাহনাজ বেগম। নগরের ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজে ডিগ্রি পাশ করে পড়াশোনার সমাপ্তি করেন। তার সংসারে এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে ছেলে মারুফ আলম চৌধুরী মুন এইচএসসিতে অধ্যয়নরত, মেয়ে সিবরালুত মুনতাহা আলম চৌধুরী এবারের জেএসসি পরীক্ষার্থী। স্বভাবতই বাবা-মা ও ভাই-বোনের প্রত্যাশা ছিল শাহনাজকে সরকারি চাকরি বানানোর। কিন্তু শাহনাজের ভাবনা ছিল ভিন্ন। নিজে কাজ করার পাশাপাশি অন্যদের স্বাবলম্বী করার চিন্তা ছিল তার মাথায়। এজন্য তিনি বাবা ও স্বামীর দেয়া টাকায় এলাকার অসহায় ও নিরীহ মানুষের মাঝে অনুদান দিয়ে যায়। অবশ্য ছোট বেলা থেকে হাতের কাজের ঝোঁক ছিল শাহনাজের। এ ব্যাপারে পৌরসভা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহনাজ বেগম বলেন, ‘আমি এলাকার সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আমার শ্বাশুড় দীর্ঘ ২২ বছর পটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। আগামী আমি পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার আশা রাখছি। কারণ হচ্ছে ‘আশায় মানুষকে বাচায়।’ চোখ ধাঁদানো ঘর সাজানো সারঞ্জাম কিভাবে তৈরি করেন তা জানতে চাইলে শাহনাজ বেগম বলেন, ‘বাতিল জিনিস মানেই যে ফেলনা নয়, এটা এক প্রমাণিত কথা। বাতিল হয়ে যাওয়া বিভিন্ন জিনিস দিয়ে নতুন সামগ্রী বানিয়ে ঘরের শোভাবর্ধন করা যায়। আমি মূলত অবসর সময়ে এ কাজগুলো করে যায়। পাড়ার অন্য মহিলারা যখন ইন্ডিয়ান স্টার জলসা দেখতে ব্যস্ত থাকে আমি তখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইউটিউবে চার্চ দিয়ে এসব অবব্যহৃত জিনিস দিয়ে ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করার কল কৌশল শিখেছি। শাহনাজ বেগম আরও বলেন, অবসর সময়ে ঘরে ছেড়া কাগজপত্র, বোতল, ককসিট, কাপড়, সিমেন্ট এসব ব্যবহার করে এগুলো তৈরি করি। তবে এখনও পর্যন্ত যা তৈরি করেছি তা নিজেই ঘর সাজানোর কাজে ব্যবহার করেছি। এছাড়া আত্বীয় স্বজন, বন্ধু, বান্ধবদের উপহার হিসেবে প্রদান করেছি। এ পর্যন্ত আমি প্রায় ৩’শটির উপর এসব সামগ্রী তৈরি করেছি।’ একটি ফুলের ল্যাম্প ঘরকে অনেক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। এটি তৈরি করতে হলে রঙিন বোতলের নিচের অংশ কেটে নিই। এরপর আঠা দিয়ে জোড়া দিয়ে একটি গোলক বানায়। একদম নিচে মাঝখানে ফাঁকা রাখতে হয়। এরপর একটা ল্যাম্পস্ট্যান্ডের ওপর বসিয়ে দিতে হয়। এরপর তৈরি হয়ে যায় একটি দুর্দান্ত ল্যাম্পশেড। একটি ওয়াটার ফলস ঘরের মধ্যে থাকলে মনে হয় যেন পাহাড়ী এলাকায় ঝর্ণা নিজ ঘরে রয়েছে। এতে করে পাহাড়ী যে পানির শব্ধ তাও কানে বাঝে। এটিতে বানাতে প্রয়োজন হয় একটি ওয়াটার পাম্প, ককসিট, সিমেন্ট, কাপড়, রঙ্গ ও একটি পনির গামলা। বাড়িতে অতিথি এলে চটপট বানিয়ে ফুল রেখে চমকে দেয়ার জন্য তৈরি করেছি অন্যরকম ফুলদানী। যা তৈরি করতে হয় কোমল পানীয়ের বোতল নিয়ে যেগুলো নিচে একটু বাঁকানো থাকে। মাঝ বরাবর কেটে নিতে হয়। এরপর খাঁজ কাটতে হয়। কাটা হলে হাতের চাপে ছড়িয়ে সেট করতে হয়। এরপর প্রত্যেকটা খাঁজ বাঁকিয়ে দিয়ে তৈরি হয় ফুলদানী। সবুজ পাতা দিয়ে বানানো ঝুলন্ত ল্যাম্প বানাতে একটু কষ্ট করতে হয়। সবুজ, সাদা, হলুদ, বাদামী এমন নানা রঙের বোতল থেকে পাতা কেটে নিতে হয়। পাতার ধার মসৃণ করা ও শিরা বানানোর জন্য গরম লোহা দিয়ে সাবধানে শেপ করতে হয়। এরপর তার দিয়ে ডাল বানিয়ে পাতাগুলো সেট করতে হয়। ডালের একমাথা খালি রাখতে হয়। পাতাগুলো নিচের দিকে দিয়ে গোল করে শেপ করতে হয়। শেষে পছন্দমতো বাল্ব সেট করতে হয়। রাতে তো দারুণ লাগবেই, দিনেও অসাধারণ লাগবে দেখতে। সতেজ সবুজ ঝুলন্ত ল্যাম্প বানিয়ে তাক লাগানোর মজাই আলাদা।

সূত্র : আমার সংবাদ




Archives
Image
পিরোজপুরের কাউখালীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: চান মিয়ার শেষ বিদায়
Image
বরিশালে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় কথিত যুবলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার
Image
২৪ বছর পর কারামুক্ত ওলিউলকে বাঁচার স্বপ্ন দেখালেন বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
আবারও ক্যান্সারে মৃত্যু, বড়সড় জরিমানার মুখে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’
Image
অকালেই নিভে গেল শিশু সামিয়ার জীবন প্রদীপ